Thursday, February 10, 2022

 বাঙলা-ভারত উপমহাদেশীয় বৌদ্ধরা বড় বেশি হুজুগে। এদের অধিকাংশই বাস্তবতা ও বিবেচনাহীন। "কান নিয়েছে চিলে" তত্ত্বে আস্থাশীল। কার ভজনা করা উচিৎ, কার নয় সে বোধ তাদের মিইয়ে গেছে। তারা বুঝে না কোনটা অনুশীলন আর কোনটা অভিনয়, কোনটা প্রতারণা আর কোনটা বাস্তব, কোনটা প্রচারণা আর কোনটা যথাযথ!! বুদ্ধের শীলসমূহের বিশেষ দিকগুলো এখন প্রচারণা, অর্থাগম ও যশ-খ্যাতির মোক্ষম অস্ত্র। কেউ তন্ত্রের পিছনে আর কেউ মন্ত্রের পিছনে দৌড়াচ্ছে। পঞ্চশীলও বুঝে না আবার অষ্টমার্গও বুঝে না; "বুদ্ধ" ও "বুদ্ধত্ব" বুঝা তো সুদূর পরাহত।

ব্যক্তিকে যখন সমষ্টির চাইতে বড়ো করা হয় বিশেষতঃ বুদ্ধের শিক্ষার সস্তা প্রচারকদের তখন বিপর্যয় আসবেই, সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্ব জোরদার হবেই। সুতরাং যা ভবিতব্য তা ঘটছে। বিভক্ত সমাজের ঐক্য সাধনে প্রয়াস নেই, বুদ্ধ শিক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষণের প্রয়াস নেই, রুগ্ন ও বৃদ্ধ ভিক্ষু এবং দুঃস্থদের জন্য কিছু করার ব্যবস্থা নেই, উপযুক্ত ভিক্ষু তৈরী করার প্রয়াস নেই, অষ্টমার্গ কি তা বুঝানোর ধারাবাহিক প্রয়াস নেই; আছে শুধুমাত্র একদল আরেকদলকে কাদা ছোড়াছুড়ির মতোন বালখিল্যতা। মৈত্রী নেই, পারস্পরিক বোঝা পড়া নেই শুধু বিশেষণ আর বিশেষণ, গুরুবাদ আর শিষ্যবাদ। সংঘদান, কঠিন চীবরদানেও আছে শুধু চর্বিতচর্বণ কথকতা। কিছু বুদ্ধোপদেশের মুখস্থ বাণী আওড়ানো আছে, নেই সেই বাণীর গবেষণামূলক, সাধারণের বোধগম্য ব্যাখ্যার প্রয়াস। নেই বিষয়ভিত্তিক কার্যকারণবাদ, কর্মবাদ ব্যাখ্যা করার জন্য কোনও পদক্ষেপ। 

আছে শুধু নেতা ও নেতৃত্ব, পুস্পমাল্য, ক্রেস্ট ও স্তুতিবাদ-স্তাবকতা। গলা ফাটিয়ে নেতাদের চিৎকার, কুৎসা রটনা ও ভিক্ষু বিদ্বেষ। নেই কোন সামগ্রিক সম্মেলন করে সমাজের হিতার্থে কোনও কিছু করার উদ্যোগ,  প্রায় সবাই এখন যশ ও খ্যাতি, অর্থ ও পদের লোভে লালায়িত। আর কিছু আছে বিদ্যা নেই, বুদ্ধি নেই, অকেজো ব্রেইন, সুচতুর মিথ্যাবাদী ধূর্ত যত, যারা নিজের পেট আর বাঁচাতে পিঠ বিশেষ কাপড়ে নিজেরে রাঙায়, তারাই সাজে, তাদেরই সাজায়, সমাজ আর ধর্মের শিরোমণি।

আর কিছু আছে যাকে তাকে গুরু আর চালকের আসনে বসিয়ে, সমাজ সদ্ধর্মের সর্বনাশ করে, আমাদের গুরুদের না আছে যোগ্যতা, না আছে ত্যাগ, না আছে আদর্শ, আছে সবার চোখে ধুলো দিয়ে, সাধু সেজে ঘর বাড়ী আর আত্মীয় স্বজন লালন পালনে সদা জাগ্রত। আর কিছু চাটুকার আছে এসবদের পদলেহন আর শেল্টারে সদা আগুয়ান কারণ এদের আগিয়ে দিলে, পদ আর সমাজ শোষণ, লক্ষ্য ও পাকাপোক্ত। আর কিছু আছে  নিজ পরিবার -সমাজে, ধর্মে পাঙ্কতেয়, অখাদ্য আর ভবঘুরে জোটে না এতটুকু সম্মান, তাদের নিজের ঘরে লাত খায় অবিরত, তারাও পিঠ আর পেট বাঁচাতে সুকৌশলে কাঠি করে, অন্যের ঘরে ঢুকে কাটে সিদ সুকৌশলে, আর কিছু আছে নিজের সমাজ আর ধর্মের সবকিছু ধান্দাবাজদের কাছে দেয় উৎলা করে। তারাই নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করে। ধন্য হে আত্মবিস্মৃত বিচারবোধহীন ও অদূরদর্শী জাতি সম্প্রদায়। বললেই বলে খারাপ!!

No comments:

Post a Comment