Thursday, February 17, 2022

"ভূমিকা" ---- জ্যোতির্ময় উপসংঘরাজ অনাথবন্ধু শাসনালঙ্কার কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাথেরো

"ভূমিকা" ---- জ্যোতির্ময় উপসংঘরাজ অনাথবন্ধু শাসনালঙ্কার কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাথেরো

 সুমনপাল ভিক্ষু


আজও যারা জন্মায় তব দেশে

দেখে নাই যাহারা তোমারে,

তুমি তাদের উদ্দেশ্যে

দেখার অতীত রূপে আপনারে করে গেলে  দান দূরকালে

তাহাদের কাছে তুমি নিত্য গাওয়া গান মূর্তিহীন।

কিন্তু যারা পেয়েছিল প্রত্যক্ষ তোমায় অনুক্ষণ

তারা যা হারাল তার সন্ধান কোথায়,

 কোথায় সান্তনা।

বঙ্গদেশে একসময় মহাযান, তন্ত্রযান, বজ্রযান তথা সহজযানের সংমিশ্রণে এক অদ্ভুত বিকৃত বৌদ্ধধর্ম প্রায় পশ্চাৎপদ অবস্থায় খ্রীষ্টিয় সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত চট্টগ্রাম তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিদ্যমান ছিল। আর সেই অদ্ভুত তথা বিকৃত বৌদ্ধধর্মের পুরোধা ছিলেন 'রাউলি' নামক একশ্রেণীর তান্ত্রিক পুরোহিত।

উনবিংশ শতকে (ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে) অনাগরিক ধর্মপাল প্রমুখের অদম্য প্রয়াসে বৌদ্ধধর্মের সংস্কার সাধন এবং নবজাগরণের প্রক্রিয়া শুরু হলে সেই প্রভাব সুদূর চট্টগ্রামে এসে উপস্থিত হয়। সেই সন্ধিক্ষণে বঙ্গদেশে তান্ত্রিক পুরোহিত 'রাউলী'দের মধ্যে প্রকৃত থেরবাদী সদ্ধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠার যে শুভ সূচনা হয়েছিল তার মূলে ছিল বৌদ্ধ প্রধান দেশ বার্মা বা মিয়ানমার এবং মহামান্য সংঘরাজ সারমেধ মহাস্থবির। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে মহামান্য সংঘরাজ সারমেধ মহাস্থবিরের উদ্যোগে জ্ঞানালঙ্কার মহাস্থবির সহ পর্যায়ক্রমে অনেকে পুনঃদীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে বুদ্ধ শাসনকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্রতী হন এবং 'সংঘরাজ' নিকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। অপরদিকে যারা উপসম্পদা গ্রহণ করার প্রশ্নে অসহযোগিতা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা 'মহাস্থবির' নিকায় নামে পরিচিত লাভ করেন।

বঙ্গদেশের (বর্তমান পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশ) এই মূল বৌদ্ধ বিনয় ধর্মের পথিকৃৎ মহাধম্মারাজাধিরাজগুরু সংঘরাজ সারমেধ মহাস্থবিরের পরবর্তী উত্তরসূরী হলেন অনাথবন্ধু কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাথের মহোদয়।

মহান জ্ঞানতাপস কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাথের মহোদয় এর শুভ আবির্ভাব ১৯৩৭ খ্রীষ্টাব্দে ২০ এপ্রিল (বাংলা বৈশাখ ১৩৪৪ বঙ্গাব্দ) জন্মস্থান  চট্টগ্রামের পাইরোল বা গঁওর গাঁ। তাঁর পিতা-মাতা দশরথ চৌধুরী এবং খঞ্জবালা চৌধুরী অতীব ধর্মগতপ্রাণ দম্পতি ছিলেন। সত্যপ্রিয় মহাথের মহোদয়ের পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল জয়সেন। তিনি তাঁর ভ্রাতা এবং ভগিনীগণ এর মধ্যে ছিলেন দ্বিতীয় জন। তাঁর অন্যান্য - ভগিনীগণ হলেন প্রয়াত সুদর্শন চৌধুরী, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুগত বিকাশ চৌধুরী (পূর্ণাচার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির ধর্মীয় সম্পাদক) পটুরাণী এবং বিণা রাণী বড়ুয়া অর্থাৎ সর্বমোট তিন ভ্রাতা এবং দুইজন ভগিনী।

বালক জয়সেনের প্রাথমিক বিদ্যাশিক্ষা প্রারম্ভ হয় গ্রামের অনতিদূরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পঞ্চম শ্রেণীতে পঠন-পাঠন কালে তাঁর পিতা দশরথ চৌধুরী কালকবলিত হন। সেই সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বৎসর। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সমাপ্তির পরে তিনি এয়াকুবদন্ডী জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সপ্তম শ্রেণীতে পঠনকালে জয়সেন পিতৃমাতৃহীন হয়ে সম্পূর্ণভাবে অনাথ হয়ে পড়েন।

১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে জানুয়ারী তাঁর ঠাকুরমা কুম্বাবতী চৌধুরানী দেবী পরলোকগমন করেন। এই সময়ে তিনি সম্পূর্ণভাবে গৃহবাস বিবাধতুল্য, প্রব্রজ্যা  উন্মুক্ত আকাশ তুল্য( সম্বাধো ঘরবাসো, অব্ভোকাসো পব্বজ্জা)- অমিয় বাণীর সারতত্ব উপলব্ধি করে ১০ জানুয়ারি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামের পটিয়াস্হ উনাইনপুরা লঙ্কারামের অধ্যক্ষ জ্ঞানীশ্বর মহাস্থবির মহোদয়ের সান্নিধ্যে প্রব্রজ্যা ধর্ম গ্রহণ করলেন, তিনি রূপান্তরিত হলেন সত্যপ্রিয় শ্রামনের।

মগ্গানট্ঠঙ্গিকো সেট্ঠো সচ্চানং চতুরো পদার্থ।

বিরাগী সেট্ঠো ধম্মানং দ্বিপাদঞ্চ চক্খুকা।

 

১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে ভদন্ত ধর্মসেন ভিক্ষু প্রয়াত  দ্বাদশ সংঘরাজ এর নিকট তাঁর উপসম্পদা কার্য সম্পন্ন হলে শ্রমণ সত্যপ্রিয় রূপান্তরিত হলেন ভিক্ষু সত্যপ্রিয়তে। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে মহাতাপস জ্ঞানীশ্বর মহাস্থবির আদেশক্রমে ভিক্ষু সত্যপ্রিয় মুকুটনাইট গ্রামের ধাতু চৈত্র বিহারে নীত্ হলেন। এই সময় তাঁর ধর্মদানে পরিতৃপ্তি লাভ করল চট্টগ্রামের সন্নিকটস্থ চান্দাগাঁও, কধুরখীল চরকানাই গ্রামের বৌদ্ধ কূলজাত উপাসক-উপাসিকাবৃন্দ। যেন তাঁর বুদ্ধের আদর্শিত ধর্মের যথাসম্ভব প্রতিপালন।

তাপাচ্ছেদাচ্চ নিকষাত্ সুবর্মিব পণ্ডিতঃ।

পরীক্ষা ভিক্ষবো গ্রাহ্যং মদ্বচো তু গৌরবাত্।

 

মহাতাপস ভিক্ষু সত্যপ্রিয় ভগবান বুদ্ধের এই দেশনাকে সম্যকভাবে উপলব্ধি করে অন্ধবিশ্বাসীকে সদ্ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবান, জ্ঞান তথা ধর্মের প্রকাশ প্রদানপূর্বক সেবা কাজে আত্মনিয়োগ করলেন।

ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের ছিলেন প্রকৃত অর্থে কর্মবীর, সমাজ জাতির সংস্কারক প্রাণপুরুষ। তাঁর অদম্য প্রেরণা ফলস্বরূপ ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে জরাজীর্ণ মুকুটনাইট বিহার পুনঃসংস্কার সম্ভব হয়েছিল। অতঃপর ক্রমান্বয়ে কধুরখীল মারজিন বিহার সংস্কার, জ্ঞানীশ্বর পালি কলেজ স্থাপন সহ অন্যান্য অনেক গুলি গুরুত্বপূর্ণ কর্ম সম্পাদন সম্ভব করেছিলেন।

সর্বোপরি বঙ্গদেশে তথা চট্টগ্রামে থেরবাদ বৌদ্ধধর্মের পুনর্জাগরণের পথিকৃৎ শ্রীলঙ্কায় 'রামাঞ্ঞা' নিকায়ের অন্যতম মনীষী আচার্য পূর্ণাচার ধর্মাধারী চন্দ্রমোহন মহাথেরো এর স্মরণে স্থাপন করেছিলেন 'পূর্রণাচার স্মৃতি মন্দির' ভারতে থেরবাদ আদর্শ প্রতিষ্ঠার যুগপুরুষ' কর্মযোগী কৃপাশরণ মহাথেরো এর স্মরণে কর্মযোগী কৃপাশরন স্মৃতি মন্দির স্থাপনসহ আরো নানাবিধ উন্নয়ন মূলক কর্মসম্পাদন সম্পূর্ণ করেছিলেন। সেগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখনীয় হল সম্যক সম্বুদ্ধের ২৮ বুদ্ধ মন্দির নির্মাণ তথা সেবা সদন প্রতিষ্ঠা বর্তমানে সেই সেবা সদন মহীরুহে পরিণত হয়েছে। সমৃদ্ধ অবস্থার জন্য কর্মবীর সত্যপ্রিয় এর অনবদ্য শ্রদ্ধা তথা অদম্য ইচ্ছা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে আছে।

পটিয়ার হাইদগাঁও বুদ্ধপাদবিম্ব চক্রশালা পবিত্র তীর্থকে পুনরুজ্জীবন করার প্রশ্নে কর্মতাপস শ্রদ্ধেয় ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের এর অবদান অনস্বীকার্য তার শুভ উদ্যোগে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্নচার শিশুমঙ্গল অনাথ আশ্রম এবং ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে গড়ে তোলেন বংশদ্বীপ বৌদ্ধ অনাথালয়। উভয় প্রতিষ্ঠান বর্তমানে অনেক অনাথ শিশু কিশোর ধর্মচর্চা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ গ্রহণ করেছে।

কর্মযোগী অনাথ বন্ধু ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের বুদ্ধ শাসন তথা সদ্ধর্মের প্রচার- প্রসারার্থে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে জন্মভূমির প্রতি শ্রদ্ধাবনত হয়ে পাইরোল গ্রামে প্রতিষ্ঠা করেন জ্ঞানীশ্বর পালি কলেজ। পটিয়াস্হ হুলাইন ছালেহ ডিগ্রী কলেজে পালি বিভাগ এর সূচনা ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে । ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম কলেজ এবং হাজি মহাম্মদ মহসিন কলেজ সংলগ্ন দেবপাহাড়ে ৫২ একর ভূমি হস্তান্তর করেছিলেন এই স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পূর্ণাচার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার। পরবর্তী সময়ে বিহারটি উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিষে জর্জরিত হয়েছিল বহুবার কিন্তু তবুও তাঁর অপরিসীম ধৈর্য্য এবং দৃঢ় মনোবলের প্রভাবে বিহারটি থিতু হয়।

বিদর্শন শিক্ষাকে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাঁর মহতী অবদান অনস্বীকার্য। বিদর্শন অনুশীলন চর্চা প্রশ্নে মুকুটনাইট ধাতু চৈত্য  বিহার দুইবার, পাইরোল  বিহারে একবার পূর্ণাচার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ১৩ বার দশ দিনব্যাপী বিদর্শন চর্চা  অনুষ্ঠিত হয়।

তুম্হেহি কিচ্চং আতপ্পং অক্খাতারো তথাগতা।

পটিপন্না পমোক্খন্তি ঝায়িনো মার বন্ধনাদি।

 

অর্থাৎ হে ভিক্ষুগণ উদ্যোগ তোমাকেই গ্রহণ করতে হবে।.........ধ্যানরত ব্যক্তিই মারের বন্ধন হতে মুক্ত হয়, অন্য পুরুষ নয়।

ভগবান বুদ্ধের এই মহতী শিক্ষা তিনি একজন উৎকৃষ্ট বুদ্ধ শ্রাবকরূপে গ্রহণপূর্বক বিদর্শন শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। পূজনীয় কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাস্থবির এই সকল মহতী কর্মযজ্ঞে এক লপ্তে আলোচনা করা কোনভাবেই সম্ভব নয় বিগত ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কর্তৃক 'ধর্মসংস্কারক' উপাধিতে ভূষিত হন ।

৩১ জানুয়ারি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এই মহান কর্মবীর উষালগ্নে মহাজীবনের পবিত্র সূর্যাস্ত ঘটে। রেখে গেলেন তাঁর কর্মযজ্ঞে অনেক কিছুই.......

তোমার মঙ্গলকার্য

তব ভৃত্যপানে

অযাচিত যে প্রেমেরে

 ডাক দিয়ে আনে,

যে অচিন্ত্য শক্তি দেয়,

যে অক্লান্ত প্রাণ,

 সে তাহার প্রাপ্ত নহে--

 সে তোমারি দান।

কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাপুরুষ একজন মহান মনীষীর নাম তাঁর সকল কর্মকাণ্ড বুদ্ধ শাসনের প্রতি সদা উচ্চারিত হয়েছে এবং প্রতিফলিত হয়েছে বিশ্বনাগরিক রূপে। আর সে কারণেই তিনি বলতে পেরেছিলেন সেই আপ্তবাক্য---

"ওদের বোল যে আমি এসেছিলাম উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে।"

জ্ঞানমিত্র, "জ্যোতির্ময় উপসংঘরাজ অনাথবন্ধু শাসনালঙ্কার কর্মবীর সত্যপ্রিয় মহাথেরো" জীবনী অসাধারণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার উপস্থাপন ভঙ্গিমা এক মাইলস্টোন। তাঁর জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় বিভিন্ন আঙ্গিকে টেলিস্কোপের স্বচ্ছতার মতো করে পরিস্কার ভাবে তুলে ধরেছেন।মহাজীবনের জীবনী কিভাবে ফুটিয়ে তুলতে হয়, সেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন গ্রন্থকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। তাঁর জীবনের পরতে পরতে কি কি কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করেছেন মহাজীবনের  একটা পরিপূর্ণ চিত্রকল্প পাবো এই জীবনী গ্রন্হে। পাঠক পাঠ করতে গিয়ে কোথাও হোঁচট খাবেন না বা বিরক্তি বোধের কারণও হবে না। এক কথায় অত্যন্ত সাবলীল উপস্থাপনা। বাংলা প্রাচীন সমাজ, ধর্ম, সাংস্কৃতিক দিক তার উত্তরণ কিভাবে হয়েছে তারও একটা সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও জীবনী শুরুতেই পাই। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের মহাজীবনের আবির্ভাব।

সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার আশু কর্তব্য হল উদীয়মান তরুণ প্রজন্মের বা তরুণ ভিক্ষু সংঘের সাঙ্ঘিক ব্যক্তিত্বদের সর্ব প্রকার সুযোগ সুবিধা দিয়ে, সমাজ, জাতি, সম্প্রদায় সদ্ধম্মের সর্বাঙ্গীন কাজে তাদের উদ্বুদ্ধ করা, না হয় ভবিষ্যতে আর একজন কর্মবীর সত্যপ্রিয় উঠে আসবে না। আর উঠে না আসা মানেই বাঙ্গালী বড়ুয়া বৌদ্ধদের অবস্থা সেই ত্রয়োদশ শতাব্দীে ফিরে যাওয়া। না হয় দেড়শ বছরে যতদূর এগিয়েছি তার তিন গুণ পশ্চাদগামীতার সম্মুখীন হতে হবে।

তাই আর দেরি নয়, এখুনি সিদ্ধান্ত নিয়ে সম্মুখ সমরে সাঁতার দিতে হবে। যাদের আমরা ধরে রাখতে পারিনি সেই দায় আমরা কেউ এড়াতে পারি না। যোগ্যতার মূল্য যতদিন দিতে পারবনা ততদিন এই বিপর্যয় বা অঘটন ঘটতেই থাকবে। সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। আমার মতো অভাজনকে কেনো যে ভূমিকা লিখতে দিলো আমার জানা নেই। গ্রন্থকার অত্যন্ত পারদর্শী তার ভূমিকা যথেষ্ট উন্নত। ভূমিকা অংশে বেশ কিছু চর্বিতচর্বণ হয়েছে আশা করি পাঠক ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। অলং ইতি বিত্থারেন। চিরং তিট্ঠতু সদ্ধম্মো, অসদ্ধম্মো বিনাস্সতু।