চীনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রসার
১৯৫৫ সালে Peking থেকে 'Buddhism in
Chine' নামে একটি বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছিল। বৌদ্ধ সংস্কৃতির মাধ্যমে চীন-ভারত মৈত্রী যে এক সময় কত গভীরে প্রোথিত হয়েছিল, তার স্বাক্ষর রয়েছে এই অ্যালবামে। এর প্রাককথনে ('Foreward') বলা হয়েছে, China had already established con-tract with India and
other Buddhist Countries before the Christian era. As a result of the cultural
intercourse between China and these countries, Buddhism was introduced into
China during the first century A.D. Since that time, eminent Indian and Chinese
monks visited each other's country on many occasions and gradually
translations of the Buddhist Scriptures were made. The careers of Fa-Hsian in
the time of the Eastern Tsin Dynesty (A.D. 317-420) and Hsuan Chuang and I Ching
of Tang times (A.D. 618-907) are specially well known all over the world. Indeed
the books left by these intrepid Travelers- The Record of the Buddhist
Countries by Fa-Hsien. The Record of the Western Region by Hsuan Chuang and The
Record of Buddhist Practices Sent Home from the Southern see by I Ching serves
us today as some of the valuable historical documents for research into not
only Buddhism but also into the history of the various regions through which
the travelers passed. যে ঐক্য ও সত্যের উপর এই চীন-ভারত এবং ভারত ও অন্যান্য দেশের সৌহার্দ্য সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত- সেই সত্যের ভিত্তি হচ্ছে বৌদ্ধ দর্শন বা বৌদ্ধ সংস্কৃতি। চীনা বৌদ্ধানুরাগীরা ভারতবর্ষকে স্বর্গভূমি বলেই মনে করতেন। ফা-হিয়েন, হিউয়েন সাঙ, বা ইৎচিং প্রমুখ পরিব্রাজকগণের গ্রন্থে এই সত্যের সমুচ্চার ধ্বনি আমরা শুনতে পাই। এখন এর উৎসের প্রতি একটু আলোকপাত করা যাক।
বৌদ্ধধর্ম প্রচার ও প্রসারে সর্বপ্রথমে যে ব্যক্তি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি হলেন মহাসম্রাট অশোক। অশোক বুদ্ধবাণীকে দিকে দিকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ধর্মদূত প্রেরণ করেছিলেন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলসহ বহির্বিশ্বে। বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারে কণিষ্কের অবদানও কম নয়- চীনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রথম উন্মেষ ঘটে খ্রীষ্ট পূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে যদিও ইতিহাস স্বীকৃত সময়কাল হল ৬৮ খ্রীষ্টাব্দ। চীনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবেশ, প্রসার এবং হাজার বছর ব্যাপী রাজপৃষ্ঠপোষকতায় এর চর্চা ও চর্যা চীনের অধিবাসীগণকে মোহিত করে রেখেছিল যা আজও তাঁদের শিক্ষাদীক্ষা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রতিফলিত।
চীন শুধুমাত্র এশিয়া মহাদেশের নয়, বিশ্বসভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এক বিস্ময়। সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ সুপ্রাচীন এই বৃহৎ দেশের অধিবাসীগণ মঙ্গোলীয় মানব গোষ্ঠীর অন্তর্গত। চৈনিক সভ্যতা বিশ্বে প্রাচীন সভ্যতা বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের দ্বারা সমর্থিত। বিশ্বের প্রথম কাগজ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীন ইতিহাসে স্বীকৃত। প্রাচীন যুগে চীনের সম্রাট 'তিয়েন জু' বা স্বর্গপুত্র (Tien-tzu
or son of Heaven) নামে অভিহিত হতেন। প্রাচীন চীনে 'তিয়েন মিং' (Tien Ming) বা (Doctrine of Heavenly Mandate) স্বর্গীয় অনুমোদন মতবাদ প্রচলিত ছিল'। চীন দেশের উপকথা, ইতিবৃত্ত এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা যে সমস্ত রাজবংশের তালিকা পাই তা নিম্নরূপ: চীন দেশের উপকথায় উল্লিখিত চীনের প্রাচীনতম শাসকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রথম তিনজন ছিলেন 'ফু-সি' (Fu-Hsi), যার রাজত্বকাল আরম্ভ হয় খ্রীষ্ট পূর্ব ২৮৫২ অব্দে'। 'শেন নুং' (Shen-Nung) এবং 'হুয়ান-তি' (Huang-Ti) এঁরা ছিলেন একাধারে 'রাজা' এবং 'ঋষি' অর্থাৎ রাজর্ষি'। 'হুয়ান-তি'র পর রাজপদ লাভ করেন ইয়াও বংশের 'সু-চিং' (Shu-Ching)। 'ইয়াও যুগ' হতে প্রাচীন চীনের রাজন্যবর্গদের ইতিকথা উল্লেখ আছে'। 'শূন' পরবর্তী সম্রাট 'ই-উ' বায়ু (Yu)। 'ই-উ', 'হিয়া' (Hsia) নামক রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা এবং তার রাজবংশের প্রতিষ্ঠা এবং স্থায়িত্বকাল ছিল খ্রীষ্ট পূর্ব ২২০৫ থেকে খ্রীষ্ট পূর্ব ১৭৬৬ পর্যন্ত। পরবর্তী রাজবংশ 'শ্যাভ্' (Shang) নামে সমধিক পরিচিত। এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা- 'চেঁ ট্যাং' এবং স্থায়িত্বকাল খ্রীষ্ট পূর্ব ১৭৭৬-১১১২। পরবর্তী রাজা হলেন 'চৌ' (Chau) (খ্রীষ্ট পূর্ব ২২১) দীর্ঘ নয়শত বৎসর ব্যাপী এই বংশের শাসনকাল প্রাচীন চীনের ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলে চিহ্নিত। এই 'চৌ' বংশের শাসনকালে চীনের দুই প্রধান দার্শনিক 'কনফুসিয়াস' (Kong-zi) এবং 'তাও' (Lao zi) মতবাদের উদ্ভব হয়। 'লাওৎজু' প্রবর্তিত (Taoism) মতবাদ এবং কনফুসিয়াসের নীতি-তত্ত্ব চীনের জাতীয় জীবনে গভীরভাবে রেখাপাত করে এবং চৈনিক সাংস্কৃতিক ইতিহাসের উন্মেষ হয়। 'চৌ' (Chau) যুগের অন্য দুটো বৈশিষ্ট্য সাম্রাজ্য বিস্তার ও সামন্ততন্ত্রের প্রতিষ্ঠা'। চৌ বংশের পরবর্তী রাজবংশ 'চিন' (Chin) নামে খ্যাত। 'চিন' বংশের (খ্রীষ্ট পূর্ব ২২১-২০৭) নামানুসারে আধুনিক চীনের নামকরণ হয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে। এই চিন বংশীয় সম্রাট 'শি-হুয়াং-তি'
(Hsi-Huang-Ti) চীনের ইতিহাসে সর্বপ্রথম সার্বভৌম সম্রাট উপাধিতে ভূষিত হন এবং সামন্ততন্ত্র উচ্ছেদ করে নতুন শাসন পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। চীনের মহাপ্রাচীর (great wall বা Cheng-Chang) পৃথিবীতে সপ্তম আশ্চর্য্যের অন্যতম একটি অক্ষয় কীর্তি। পরবর্তী 'হ্যান' (Han) রাজবংশের (খ্রীষ্ট পূর্ব ২০৭)' কার্যকলাপ চীনের ইতিহাসে এক সমৃদ্ধময় ইতিহাস। এই রাজবংশের অধীনে চীনে সাহিত্য, বিজ্ঞান, ললিতকলা, শিল্পক্ষেত্রে সন্তোষজনক উন্নতি ঘটে। ঐতিহ্য প্রীতি ছিল প্রাচীন চীনের সুশীল সমাজের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কনফুসিয়াস ও লাওৎজু দুজনেই প্রাচীন চীনের দার্শনিক এবং দুজনেই চীনের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ববোধ করেছেন এবং ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা দেখাতেন। উভয় দার্শনিকের মত হল প্রাচীন যুগের ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে পারলে রাজ্যে আবার সমৃদ্ধি ফিরে আসবে। কনফুসিয়াস ছিলেন একাধারে দার্শনিক, শিক্ষক ও খ্যাতিমান চিন্তাবিদ। চৌ বংশের রাজত্বকালে 'ল' নামক সামন্ত রাজ্যে খ্রীষ্ট পর্ব ৫৫১৮ অব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্বন্ধে মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন-নৈতিক মূল্যবোধ ও ব্যক্তিজীবনের নৈতিকতা সমাজ এবং রাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিফলিত হতে পারে। লাটিন ভাষায় তাঁর নামের বিভিন্ন রূপান্তর হয়েছে, 'Kong zi', 'King-Fu Tzi', 'Kung-Fu-tzu' ইত্যাদি। তাঁর নামের বিশেষ অর্থ বা বিশেষণ হল 'শ্রদ্ধেয় প্রভু' (Venerable
master Kung)। প্রাচীন চীনে আর একজন দার্শনিক হলেন লাওৎজে। তাঁর মতবাদ হল 'তাও' (Taoism)। এই দার্শনিকের নামের বিশেষণ হল 'শ্রদ্ধেয় দার্শনিক' (Venerable Philosopher)। লাওৎজের প্রণীত গ্রন্থ হল 'তাও-তে-চিং'
(Tao-te-Ching); 'তাও' অর্থ হল পথ (The way)। 'তে' অর্থ যাবতীয় বস্তুর অন্তর্নিহিত শক্তি (power
inherent in a thing)। 'তাও তে চিং' গ্রন্থে বিশ্বজগৎ, মানুষ, নৈতিকতা, রাজনীতি, সমস্ত কিছু আলোচিত হয়েছে। বস্তুত এই দুজন দার্শনিক চীন দেশের ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক রূপে সর্বোচ্চ স্থানে অভিষিক্ত। কনফুসীয়, তাও এবং বৌদ্ধ ধর্ম চীনের ধর্মবিশ্বাস ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তি রচনা করেছিল। কনফুসীয় নীতি ও তাও দর্শনের মধ্যেই চীনের রাজধর্ম, গণধর্ম, নীতিধর্ম ও সংস্কৃতির যাবতীয় মূল উপাদান নিহিত আছে।
চীনে বৌদ্ধধর্মের অনুপ্রবেশ সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক জগতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করে। কনফুসীয় অনুশাসন নীতি বাস্তবপন্থী আর বৌদ্ধধর্ম হচ্ছে অর্ন্তদর্শন এবং আত্ম নিরীক্ষণ পন্থী; শিক্ষিত, অশিক্ষিত সর্বশ্রেণীর জনগণের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম জনপ্রিয় হয়। বৌদ্ধ ধর্মাচরণের শাস্ত্রীয় পদ্ধতি বা অনুষ্ঠান জনসাধারণকে বৌদ্ধধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করে। ধর্ম হিসেবে বৌদ্ধধর্ম তাও-তত্ত্ব অপেক্ষা ব্যাপকতর, এবং দর্শন হিসেবে কনফুসীয় নীতি অপেক্ষা বৌদ্ধধর্ম জীবনে আধ্যাত্মিকতার উপর ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ করে। ফলে চীনা জনগণের কাছে বৌদ্ধধর্ম অধিক গ্রহণযোগ্য হয়।
চীনের দার্শনিক পরম্পরা অনুসারে খ্রীষ্টীয় প্রথম শতকে প্রাচীন হান রাজবংশের রাজা 'মিং-তি'র (Ming-ti) সময়ে চীন দেশে মধ্য এশিয়ার মাধ্যমে প্রথম বৌদ্ধধর্মের প্রচার হয়। সম্রাট 'মিং-তি' স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য ভারত থেকে দুজন বৌদ্ধ শ্রমণকে চীনে আমন্ত্রণ করেন 'খ্রীষ্ট পূর্ব ৫৮-৭৫'-এ। এই বৌদ্ধ শ্রমণদ্বয় হলেন 'কাশ্যপ মাতঙ্গ' ও 'ধর্মরক্ষ'১২ '(ধর্মরত্ন)'; আবার কোন কোন পণ্ডিত 'ধর্মারণ্য' শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তাঁরা রাজধানী লো ইয়াং-এ বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করেন। কিংবদন্তী অনুসারে উক্ত ভিক্ষদ্বয় শ্বেত অশ্বে আরোহণ করে এই বিহারে "দ্বিচত্বারিংশং" বা "সৎ-শ্য" বা "চাং-চিং" (The
sutra of in forty two sechono) নামক বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ নিয়ে এসেছিলেন বলেই বিহারটির নাম 'শ্বেতাশ্ব বিহার', চীনা নাম 'পো-মা-ঘুৎ'
(Po-ma-Kuth) বা 'পায়মা-শ্চ'১০। চীনে বৌদ্ধধর্ম প্রবেশের পর্বোল্লিখিত সময়কাল সম্পর্কে মতভেদ দেখা যায়, যদিও এই তারিখ এখনও পর্যন্ত স্বীকৃত। ডঃ হরপ্রসাদ রায়ের মতে "খ্রীষ্ট পূর্ব ২য় সালে চীনে বৌদ্ধধর্মের আনুষ্ঠানিক প্রচার হয়েছিল। তাঁর মতে তৃতীয় খ্রীষ্টাব্দে (খ্রীঃ ৩৮৫-৫৫০) মুছোয়ান প্রণীত 'ওয়েই ল্যু' (Brief
account of Wei Dynstuy) গ্রন্থে উল্লিখিত হয়েছে যে, চীনের রাজকীয় বিদ্যায়তনে কোন বিদ্বানের এক শিক্ষানবীশ- যার নাম ছিল চিংলু (Jinglu) কুষাণরাজের চীনের রাজধানীস্থিত দূত-ই-খুনের কাছে বৌদ্ধগ্রন্থ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। তখন চীনের সম্রাট আয়তির (Ai-ti) রাজত্বকাল (খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ ২ সন)। এই সময় চীনে ত্রিং (Tring) নামে এক উচ্চ শ্রেণীর আধিকারিকও বৌদ্ধগ্রন্থ শিক্ষা করেন। গ্রন্থটির নাম বৌদ্ধধর্ম (Fu-Jiao)। ইৎজুন গ্রন্থটির প্রচারক। গ্রন্থটি তৃতীয় খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত লভ্য ছিল। কথিত আছে খ্রীষ্টজন্মের তিনশত বৎসর পূর্বে মধ্য এশিয়ায় ভারতীয় ঋষি গৌতম বুদ্ধের বাণী প্রচারিত ও প্রসারিত হয়েছিল। মধ্য এশিয়ার নানা অঞ্চলের অধিবাসীগণ যেমন- পারস্য, শক বা খোটানবাসী, কুচবাসী, শুলিক, সন্ডিয়ানাবাসী জনগণ বুদ্ধের ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিল। বুদ্ধের বাণীতে দীক্ষিত হয়ে মধ্য এশিয়াবাসীগণ নিজেরাই প্রচারক হয়ে ওঠেন।
পৃথক এক কিংবদন্তী অনুসারে- 'অশোকের সমসাময়িক চীন সাম্রাজ্যের অন্যতম সম্রাট ছি-হুয়াংতি (Chih-Huang-Ti)-র সময় প্রথম বৌদ্ধ ভিক্ষু চীনে উপনীত হন। প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের মতে এরূপ আরো দু'একটি পৌরাণিক মতবাদ চীনে বৌদ্ধধর্মের প্রবেশের ইতিহাসে প্রচলিত আছে। খ্রীষ্ট পূর্ব দ্বিতীয় অব্দের প্রবাদটি ঐতিহাসিক সত্য বলে পণ্ডিতগণ বিশ্বাস করেন। চীন সম্রাট আই-তি-র রাজত্বকালে মধ্য এশিয়াস্থিত য়ু-চি (Yuch-Chih) রাজার রাজধানী বক্ষু নদীর তীরে অবস্থিত ছিল; সেখানে এক চীনা দূত বৌদ্ধ সাহিত্য অধ্যয়ন করার জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল।' হরপ্রসাদ রায় এবং প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের গবেষণা এবং আলোচনাকে প্রামাণ্য ধরলে বলা যায় যে চীনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবেশ খ্রীষ্ট পূর্ব দ্বিতীয় সালেই হয়েছিল। 'কুষাণদের চীনা নাম য়ু-য়েচ্ (Yezhi)। চীনের উত্তর পশ্চিম প্রান্ত থেকে হুণদের দ্বারা বিতাড়িত য়ু-য়েচগণ ব্যাকট্রিয়া অর্থাৎ বাহিল (বক্র) অঞ্চলে নিজেদের রাজ্য স্থাপন করেন। কুজুল কাও ফিসেল-এর রাজত্বকালে কুষাণরা খুবই শক্তিশালী হন। কুজুল সমগ্র 'তা-শিয়া' সহ (Da xia বা Bactrian) পারস্যদেশ (Anxi), কাবুল (Gaofu) ও কাশ্মীর পর্যন্ত রাজ্যবিস্তার করেন। তাঁর আনুমানিক রাজত্বকাল খ্রীষ্ট পূর্ব প্রথম শতকের শেষ দশক থেকে ১৬ খ্রীষ্টাব্দ।'১" এই অঞ্চল সমৃদ্ধ বাণিজ্যের জন্য খ্যাত ছিল। তৎকালীন 'রেশম পথ' (Silk Route) এই অঞ্চল হয়ে চীনের বাজধানী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অতএব চীনের সঙ্গে কুষাণদের পারস্পরিক সংযোগ ঘনিষ্ট ছিল। ফলে উভয় রাজধানীতে দুই দেশের দূত বিনিময় ছিল খুবই স্বাভাবিক। কুষাণরা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং এই ধর্মের প্রসারের জন্য কুষাণদের প্রয়াস সর্বজনবিদিত। খ্রীষ্টাব্দের সুচনা পর্বের দু'সাল আগে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের প্রসঙ্গ যে এক আকস্মিক ঘটনা নয়, তার প্রমাণ চীন ও ভারতের মধ্য ভারতীয় ও মধ্য এশিয়ার বণিক ও ধর্মপ্রচারকদের যাতায়াত ছিল; যার ফলে পণ্য ও ধর্ম বা শিল্প সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময়ের আধার অনেক দিন থেকেই প্রস্তুত ছিল।" 'আর এক দিকে চীনের রেশম ও বিলাস সামগ্রী যেমন যাযাবর সামন্তদের সভ্য বানাতে প্রয়াসী হয় তদ্রুপ তাদের আধ্যাত্মিক ক্ষুধা মেটাতে চীনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার দ্রুততর হয়।
ষষ্ঠ শতাব্দীতে অর্থাৎ ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দে 'তো-বা খা'ন (To-be-Khan)
বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন ও যাযাবার জাতির হিংস্র প্রবৃত্তি এই ধর্মের প্রভাবে অনেকাংশে প্রশমিত হয়। বৌদ্ধ ধর্মের অনুরাগী তো-বা খান একটি বৌদ্ধ বিহারও নির্মাণ করেন। এর কিছুকাল পূর্বেই বৌদ্ধ ধর্ম কোরিয়া হয়ে জাপানে প্রবেশ করে (৫২২ খ্রীষ্টাব্দে)। বৌদ্ধশাস্ত্র সংগ্রহার্থে তো-বা চীন রাজধানীতে (বর্তমান হোনান) পর্যন্ত দূত প্রেরণ করেন। চীনের বৌদ্ধ ধর্মের প্রবেশ, প্রচার ও প্রসারের সময়, কাল, বিভিন্ন রাজা ও রাজবংশের রাজত্বকাল এবং সর্বোপরি বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার-প্রসারে তাঁদের অবদান পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, অনেক প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্ম চীনাবাসীর মন জয় করতে সক্ষম হয়েছিল। বন্ধুর পথ ধরে অগ্রসর হলেও বৌদ্ধ ধর্ম পরবর্তীকালে চীনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জগৎকে বাস্তব দিকনির্দেশনা দিয়েছিল, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই প্রচার যাঁদের হাত ধরে সূচিত হয়েছিল সেই প্রাতঃস্মরণীয় ভিক্ষু কাশ্যপমাতঙ্গ এবং ভিক্ষু ধর্ম-রক্ষের প্রচেষ্টাতেই চীনে বহু বৌদ্ধ-বিহার প্রতিষ্ঠা হয় ও ধর্ম প্রচার সংঘটিত হয়। 'কথিত আছে' কাশ্যপমাতঙ্গ লোয়াং বিহারে অবস্থানকালে মহাযান 'সুবর্ণপ্রভাস সূত্র' ব্যাখ্যা করেন যা আজও চীনের মহাযান বৌদ্ধ অধ্যুষিত অঞ্চলে সমধিক জনপ্রিয়। অপর ভিক্ষু ধর্মরক্ষ (Chu-Fa-hu) চীনের রাজধানীতে অবস্থানকালে বহু বৌদ্ধ সংস্কৃত গ্রন্থের চীনা অনুবাদ করেন। কথিত আছে যে তিনি 'বিয়াল্লিশ খণ্ড সূত্রের' চীনা অনুবাদ করেছিলেন। চীন দেশে এটিই প্রথম অনূদিত বৌদ্ধ সংস্কৃত গ্রন্থ। ডঃ প্রবোধচন্দ্র বাগচী মহাশয়ের মতে উপরোক্ত গ্রন্থখানি বিভিন্ন বৌদ্ধ গ্রন্থ হতে সংগৃহীত উপাদানে সমৃদ্ধ যা চীনা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে সঙ্কলিত হয়েছিল। ২২ কথিত আছে, ধর্মরক্ষের অনূদিত ২১১টি গ্রন্থের মধ্যে ৯০টি সংরক্ষিত আছে। তিনি পালি গ্রন্থ বুদ্ধবংশ ও জাতক ইত্যাদি চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। তাঁর অনূদিত গ্রন্থের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো 'বৈপুল্যশাস্ত্র'। অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে 'সদ্ধধর্মপুণ্ডরীক', 'ললিতবিস্তর', 'বিমলকীর্তি নির্দেশ সূত্র', 'মহাকাশ্যপ নিদান সূত্র', 'প্রজ্ঞাপারমিতা', 'দশভূমি সূত্র' প্রভৃতি মহাযান বৌদ্ধগ্রন্থ উল্লেখযোগ্য। কিংবদন্তী আছে যে, তাঁর তিরিশেরও অধিক ভাষায় পাণ্ডিত্য ছিল। কাশ্যপমাতঙ্গ এবং ধর্মরক্ষের পরে চীনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারে যিনি অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি হলেন কুচ নিবাসী আচার্য 'কমার জীব'
(Chiu-mo-lo-shih)। কুমারজীব পঞ্চম শতাব্দীর প্রথমভাগে কুচে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতার নামের কুমার ও মাতার নামের জীব উভয়ের সাথে মিল রেখে তাঁর নাম হয় কুমারজীব। তাঁর পিতা ছিলেন কাশ্মীরের বৌদ্ধ পণ্ডিত এবং মাতা ছিলেন কুচরাজ বংশীয় জীবা। ২৪ কমারজীব মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম পথ প্রদর্শক রূপে চিহ্নিত। কমারজীবের পাণ্ডিত্য ছিল অসাধারণ। 'সংস্কৃত ও চীনা উভয় ভাষায় সুপণ্ডিত কুমারজীব কাশগড়ে অবস্থানকালে অভিধর্ম শিক্ষা লাভ করেন।২৫ ডঃ প্রবোধ চন্দ্র বাগচীর মতে কমারজীব চীনা ভাষায় ১০৬টি গ্রন্থের অনুবাদ করেন।
নাগার্জুনের মহাযান দর্শনের সঙ্গে তাঁর মাধ্যমেই চীনবাসীর প্রথম পরিচয় ঘটে। কুমারজীবের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল 'মহাপ্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র'। এছাড়া তিনি সুখাবতীব্যূহ', 'সদ্ধর্মপুণ্ডরীক সূত্র', 'সূত্রালঙ্কার শাস্ত্র' চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। চীনে বৌদ্ধ ধর্ম একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে চীন সম্রাট ইউ-তির (Wu-ti) রাজত্বকালে (তৃতীয় শতকে)। ইউ-তি তাঁর সাম্রাজ্যের বহু স্থানে সংঘারাম তৈরি
করেন এবং তিনিই বৌদ্ধ ধর্মের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বৌদ্ধ গ্রন্থগুলির চীনা অনুবাদ, পঠন-পাঠন ও ব্যাখ্যার দ্বারা চীনা জনগণের মনে বৌদ্ধ ধর্ম একটি স্থায়ী আসন করে নেয় এবং ক্রমে ক্রমে বৌদ্ধ ধর্ম চতুর্থ শতকের মধ্যপর্বের পূর্বেই জাতির প্রধান ধর্মরূপে পরিগণিত হয়। সুতরাং চীনদেশে বৌদ্ধধর্ম রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করে চতুর্থ শতাব্দীতে। ইউ-তির রাজত্বকালে বোধিধর্ম নামে এক ভারতীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু 'সুং-শান'
(Shung-Shan) নামক পাহাড়ে বাস করতেন। আচার্য বোধিধর্মের পরে কুমারজীবই চীনে মহাযান ধর্মের প্রচলন করেন যা কিনা চীনাবাসীগণ হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করে নিয়েছিলেন। ক্রমে ক্রমে বহিরাগত এই ধর্ম চীনাবাসীগণকে এমনভাবে আকৃষ্ট করে যে তাঁরা বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন চর্যাকে দেশজ চর্যায় পরিণত করেন এবং নিজেদের দর্শন বলে মনে প্রাণে গ্রহণ করেন। চীনে বৌদ্ধধর্ম প্রচারে যে কয়েকজন ভারতীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু অগ্রণী ভূমিকা রাখেন, তাঁদের মধ্যে বুদ্ধযশ, পুণ্যত্রাত, বিমলাক্ষ বা বিমলকীর্তি উল্লেখযোগ্য। এঁরা কুমারজীবের সাথে চীনে এসে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে বিশিষ্ট ভূমিকা নিয়েছিলেন। অতঃপর কাশ্মীর হতে যেসব আচার্যগণ চীনে গমন করে চীনে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সঙ্ঘভূতি, সঙ্ঘদেব, গুণবর্মন, গুণভদ্র, ধর্মমিত্র প্রমুখ। বুদ্ধযশ 'আকাশগর্ভ বোধিসত্ত্বসূত্র', গুণভদ্র 'লঙ্কাবতার সূত্র' ও 'মিলিন্দপঞহো' নামক পালিগ্রন্থও চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। কালযশ যে গ্রন্থটি অনুবাদ করেন সেটি হল 'অমিতায়ুবুদ্ধ সূত্র'। মন্ত্রসেন 'সপ্তশতিকা-প্রজ্ঞাপারমিতা' অনুবাদ করেন। সঙ্ঘভদ্র ছিলেন অভিধর্মে সুপণ্ডিত। তিনি 'বিমোক্ষমার্গ সূত্র' (চীনা নাম Cie to-tao অর্থাৎ মুক্তির পথ) অনুবাদ করেন। অপর দিকে আচার্য সঙ্ঘভূতি সর্বাস্তিবাদ বিনয়ের অর্থকথা চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন এবং আচার্য সঙ্ঘদেব অভিধর্ম পিটকের 'জ্ঞানপ্রস্থান সূত্রের' চীনা নির্দেশ' এবং 'উপালি পরিপুচ্ছা' গ্রন্থদ্বয় অনুবাদ করেন। চীনের জেতবন বিহারে অবস্থানকালে গুণভদ্র অসংখ্য বৌদ্ধ গ্রন্থের চীনা অনুবাদ করেন; যার মধ্যে সংযুক্তাগম, 'রত্নকারগুব্যূহ' ও সর্বান্তিবাদ সম্প্রদায়ের অভিধর্ম প্রকরণবাদ শাস্ত্র উল্লেখযোগ্য। ষষ্ঠ খ্রীষ্টাব্দের ত্রিশের দশক থেকে ষাটের দশক পর্যন্ত যেসব ভারতীয় বৌদ্ধ ভিক্ষু চীনে প্রেরিত হন তাঁরা চীনে বৌদ্ধ সাহিত্যের উন্নতিতে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পরমার্থ। পরমার্থ ১৯টি গ্রন্থ সংস্কৃত থেকে চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। অপর দু'জন হলে বোধিরুচি ও বোধিধর্ম। এঁরা ৫৪৮ খ্রীষ্টাব্দে চীনে আসেন 'ওয়েই' (Wei) রাজত্বকালে। বোধিরুচি যোগাচার শাখার 'লঙ্কাবতারসূত্র' অনুবাদ করেন; বোধিরুচি অনুদিত ১৭টি সূত্রগ্রন্থ পাওয়া যায়। বোধিধর্ম চীনে যে মতটি প্রচার করেন সেটি নাগার্জুনের শূন্যতাবাদের উপরই প্রতিষ্ঠিত। বোধিধর্মের মতকে চীনবাসীগণ বলেন 'Tsugmen' বা 'Chan-tsing' 'Chan' কথাটি এসেছে সংস্কৃত 'ধ্যান' শব্দ হতে, যার পালি প্রতিরূপ হল 'ঝান'। অপর এক আচার্য হলেন জিনগুপ্ত যিনি 'অভিনিষ্ক্রমণসূত্র' অনুবাদ করেন; যাঁর চীনা নামের যথাযথ অর্থ হল 'বুদ্ধ পূর্ব কার্যসংগ্রহসূত্র'।**
'সাং' (Shang) বংশীয়দের (খ্রীঃ ৬১৮-৯০৭) রাজত্বকাল ছিল চীনদেশের ইতিহাসে 'বৌদ্ধ ধর্মের সুবর্ণ যুগ'। খ্রীষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্যভাগে চীনের সাথে ভারতবর্ষের বিশেষভাবে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। সম্রাট 'তাই সুঙের' রাজত্বকালেই চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ ৬২৯ খ্রীষ্টাব্দে ভারত পরিক্রমায় এসেছিলেন।" বলা বাহুল্য তাঁর ভ্রমণ বৃত্তান্ত ভারতবর্ষের ইতিহাসের একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ বিশেষ।
তথ্যনির্দেশ:
১। কানুন গো, সুনীতিভূষণ, প্রাচ্যের রাষ্ট্রদর্শন, চট্টগ্রাম, ২০০৪, পৃঃ ২৯।
২। চট্টোপাধ্যায়, হরপ্রসাদ, চীনের ইতিহাস, ২০০৫, পৃঃ ১১।
৩। চট্টোপাধ্যায়, শচীন্দ্রনাথ, মহাচীনের ইতিকথা, প: ১৩-১৪।
৪। তদেব, পৃ: ৮।
৫। চট্টোপাধ্যায়, হরপ্রদাস, চীনের ইতিহাস, কোলকাতা, ২০০৫, পৃঃ ১১।
৬। তদেব, পৃ: ১১।
৭। Mangon, Kenneth, W. (ed.), The path of the Buddha,
Delhi 1997, p. 188.
৮। Bishop, Donald H. (ed.), Introduction of Chinese
Thought, Delhi, 2001, p. 14.
৯। Eliot, Sir Charls, Hinduism and Buddhism, London,
1962, Vol. III. P. 288.
১০। Regt, Noble Rans, Buddhism a History, California,
1994, p. 133.
১১। Banerjee, Anukul Chandra, Studies in Chinese Buddhism,
Farma K. L. M. Pvt. Ltd., Kolkata, 1977, p. 7.
১২। মুখোপাধ্যায়, প্রভাত কুমার, চীনে বৌদ্ধ সাহিত্য, কোলকাতা, ১৯৭৮, পৃঃ ২।
১৩। Morgan, Kenneth W. (ed.), The path of Buddha, Delhi,
1997 , p. 184.
১৪। রায়, হরপ্রসাদ, চীনে বৌদ্ধ ধর্মের উন্মেষ, (ইতিহাস অনুসন্ধান, নং-১৫) পৃ: ৯৯৪ এবং Roy, Haraprasad, Chinese Sources of South Asian
History in Trans-lation, Vol. 1. The Asiatic Society. Kolkata, 2004. p. 5.
১৫। মুখোপাধ্যায়, প্রভাত কুমার, চীনে বৌদ্ধ সাহিত্য, পৃ: ২।
১৬। তদেব।
১৭। Roy, Chowdhury, H.C., Political History of Ancient
India, p. 460, and Mazumder, R. C. The Age of Imperial Unity, p. 137.
১৮। Ganden, P. Coins of the Greek and Scythhian kings of
Bactria and India in the British Museum, p. 120, P1 XXV, I. Smith, V.A.,
catalogue of the coins in the Indian Museum, p. 33, No. I. pl, VI, 14.
১৯। Liu, Xinru, Ancient India and China. Trade and
Religion exchange A.D. 01-600, New Delhi-1988.
২০। সাংকৃত্যায়ন, রাহুল, মধ্য এশিয়া, নিউ এজ পাবলিকেশন, কোলকাতা, ২০০৩, পৃঃ ৫৬।
২১। হালদার (দে), মণিকুন্তলা, বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস, মহাবোধি বুক এজেন্সি, কোলকাতা,
১৯৯৬, পৃ: ৪৪২।
২২। Bagchi, Probodh Chandra, India and China, Saswat
library, Calcutta, 1981, p. 93.
২৩। মুখোপাধ্যায়, প্রভাত কুমার, চীনে বৌদ্ধ সাহিত্য, কোলকাতা, ১৯৭৮।
২৪। Morgan, Kenneth W, (ed.), The Path of Buddha, Delhi,
1997, p. 196.
২৫। সাংকৃত্যায়ন, রাহুল, বিস্মৃত যাত্রী, চিরায়ত প্রকাশনী, কোলকাতা, ২০০০, পৃ: ১৩১।
২৬। বৌদ্ধকোষ, সম্পা, বেলা ভট্টাচার্য, চতুর্থ খণ্ড, (কুমারজীব), সাধনচন্দ্র সরকার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা ২০০৪, পৃঃ ৩৯৩।
২৭। Hazra, Kanai
Lal, Buddhism in India as described by the Chinese Pilgrims A.D. 399-689,
Delhi, 1983, p. 78.
২৮। Rhys Davids,
T.W., Buddhist India, Delhi, 1971, p. 237.
২৯। রায়, শরৎচন্দ্র, বৌদ্ধ ভারত, করুণা প্রকাশনী, কোলকাতা, পৃ: ৮৫।
৩০। তদেব, পৃঃ ২৩৪।
৩১। বাগচী, প্রবোধ চন্দ্র, ভারত ও চীন, বিশ্বভারতী গ্রন্থালয়, ১৩৫৩, কার্তিক, পৃঃ ১০।
৩২। মুখোপাধ্যায়, প্রভাত কুমার, চীনে বৌদ্ধ সাহিত্য, কোলকাতা, ১৯৭৮।
৩৩। হালদার (দে), মণিকুন্তলা, বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস, তদেব, পৃঃ ৪৪৪।
৩৪।
তদেব, পৃ: ৪৪৫।
৩৫। বাগচী, প্রবোধচন্দ্র, ভারত ও চীন, বিশ্বভারতী গ্রন্থালয়, ১৩৫৩, কার্ত্তিক, পৃঃ ৩৫।
৩৬। মুখোপাধ্যায়, প্রভাত কুমার, চীনে বৌদ্ধ সাহিত্য, তদেব, পৃ: ৬৪-৬৫।
৩৭। বাগচী, প্রবোধচন্দ্র, ভারত ও চীন, তদেব, পৃঃ ২৭।
No comments:
Post a Comment