গৌতম বুদ্ধ খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ অব্দে শাক্য জনগোষ্ঠীর রাজধানী কপিলবাস্তুর নিকট লুম্বিনী বনে জন্মগ্রহণ করেন। এই স্থান বর্তমানে নেপাল দেশের অন্তর্গত এবং ভারতের সীমা হতে ৫ মাইল দূরে অবস্থিত। এই স্থানে বৌদ্ধ সম্রাট অশোকের একটি অভিলেখ যুক্ত স্তম্ভ ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত হয়েছে এবং উক্ত স্তম্ভে উৎকীর্ণ আছে- "হিদ বুধে জাতে তি"। পালি ত্রিপিটকে শাক্যগণকে অভিমানী এবং বিশুদ্ধ জাতির ক্ষত্রিয় বলা হয়েছে।
সুত্তনিপাত (৩.১.১৮-১৯) গ্রন্থে গৌতম বুদ্ধের জাতি সংক্রান্ত বিবরণ এইভাবে দেখা হয়।
"উজু জনপদো রাজা হিমবন্তস্স পস্সতো।
ধনবিরিয়েন সম্পন্নো কোসলেসু নিকেতিনো।।
আদিচ্চা নাম গোত্তেন সাকিয়া নাম জাতিয়া।"
আবার 'বুদ্ধবংস' গ্রন্থে (পৃ. ২১৪) গৌতম বুদ্ধের বংশ বৃত্তান্ত এই রূপে বর্ণিত হয়েছে-
"নগরং কপিলবত্থু মে রাজা সুদ্ধদনো পিতা,
ময়হং জনেত্তিকা মাতা মায়াদেবীতি বুচ্চতি।"।।১২২০।।
অর্থাৎ, আমার জন্মভূমি কপিলবাস্তু নগর, পিতা শুদ্ধোদন নামক মহারাজা, আমার জননী মায়াদেবী নামে খ্যাত।
হিমালয়ের তরাই অঞ্চলে স্থিত শাক্য জনপদ কোশলরাজার অধীনস্থ একটি গণরাজ্য ছিল যা বিঢ়ুরব-এর আক্রমণ পর্যন্ত প্রায় স্বাধীন ছিল। গণ-এর শাসনকার্য একটি সমিতি বা সভা দ্বারা পরিচালিত হত। এইরূপে মনে হয় গণ-এর একজন নির্বাচিত প্রধান প্রতিনিধি থাকত যাকে রাজার ন্যায় সম্মান প্রদান করা গণরাজ্যের প্রত্যেক্যটি ব্যক্তির মূল কর্তব্য ছিল। বুদ্ধের আত্মীয়-পরিজন সম্পর্কে উত্তরকালীন বৌদ্ধ গ্রন্থে (সংস্কৃত) বিভিন্ন এবং পরস্পর বিরোধী অসামঞ্জস্য সূচনা পাওয়া যায়। যেমন মহাকবি অশ্বঘোষ বিরচিত 'বুদ্ধচরিত' কাব্যে (২য় শতাব্দীতে, সম্রাট কণিষ্কের সময়কালে) গৌতম বুদ্ধের জীবন কাহিনীতে পুরাণ, মহাকাব্য, নানামুনি, রাজর্ষি এবং তাঁদের নানা উপাখ্যান এসে সম্পৃক্ত হয়েছে। যেমন- "তথাগতের উৎপত্তি হেতু তুষ্ট, বিশুদ্ধ প্রকৃতি শুদ্ধাধিবাস দেবগণ অনুরাগশূন্য হইয়াও, দুঃখনিমগ্ন জগতের মঙ্গলের আশায় আনন্দিত হইলেন।"।। ৩৯।।
তিনি প্রসূত হইলে, হিমালয়রূপ শঙ্কুযুক্তা ধরণী, বাতাহত নৌকার ন্যায় চঞ্চল হইল এবং অভ্রশূন্য গগনমণ্ডল হইতে উৎপল ও পদ্মের সহিত সচন্দনা বৃষ্টি পতিত হইল।।।৪০।।
মনোজ্ঞ স্পর্শসুখকর সমীরণ, দিব্যবসন সমূহ বর্ষণ করিয়া প্রবাহিত হইল, সেই একই সূর্য অধিকৃত প্রকাশ পাইল এবং অগ্নি অপরের চেষ্টা ব্যতিরেকে স্বতই মনোজ্ঞ সৌম্য শিখা ধারণ করিয়া জ্বলিয়া উঠিল। ।।৪১।।
রাজা শুদ্ধোদন পুত্রের এই অলৌকিক জন্ম দেখিয়া স্বভাবত ধীর গম্ভীর প্রকৃতি হইলেও অতিশয় ব্যাকুল হইয়া উঠিলেন। তাঁহার স্নেহপ্রবণ হৃদয় দ্রবীভূত হইল। চক্ষু হইতে আনন্দে ও আশঙ্কায় অশ্রুধারা নিপতিত হইল। (এই অংশ সংস্কৃত পুঁথিতে পাওয়া যায় না, তিব্বতী অনুবাদের মধ্যে পাওয়া যায়।)
'মহাবস্তু নামক পালিগ্রন্থে গৌতম বুদ্ধের পিতা-মাতা এবং তাঁর পালিতা মাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমীর পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যায়। বিনয় পিটকে মহাপ্রজাপতি গৌতমীকে বুদ্ধের 'মাতৃস্বসা' বলা হয়েছে।
বুদ্ধের জন্মকালীন 'আশ্চর্যাদ্ভূত ধর্ম' কথাকে প্রাচীন রূপে স্বীকার করা যায় না আর না তো অসিত ঋষির ভবিষ্যৎ বাণীকে ঐতিহাসিক বলে মনে করা হয়। সম্ভবত এই সকল বিষয়গুলি উত্তরকালে সংযোজিত হয়েছে।
মহাকবি অশ্বঘোষ তাঁর 'বুদ্ধচরিত' কাব্যে রাজকুমার সিদ্ধার্থের (বুদ্ধের পূর্বনাম) মহা-অভিনিষ্ক্রমণের বিষয়টিকে অত্যন্ত কাব্যিকতার সঙ্গে পরিবেশন করেছেন। 'বুদ্ধচরিত' কাব্যের পঞ্চম সর্গের মূলপ্রতিপাদ্য বিষয় এইরূপ- "...তখন অন্য সকলের অদৃশ্য, ভিক্ষুবেশী এক পুরুষ তাঁহার সমীপে উপস্থিত হইলেন।” ।।১৬।।
রাজপুত্র তাঁহাকে প্রশ্ন করিলেন: "আপনি কে?" তিনি বলিলেন: "হে নরপুঙ্গব, আমি জন্মমৃত্যু ভীত শ্রমণ। মোক্ষ নিমিত্ত প্রব্রজ্যা গ্রহণ করিয়াছি।।।১৭।।
এই বলিয়া রাজপুত্রের দৃষ্টিগোচরেই তিনি আকাশে উত্থিত হইলেন। সেই (শ্রমণ) আকৃতিধারী পুরুষ ছিলেন অপরের মনোভাববেত্তা এক দেবতা। রাজকুমারের স্মৃতিজাগ্রত করিবার জন্য তিনি সমাগত হইয়াছিলেন। ।। ২০।।
২৯ বৎসর অবস্থাতে রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৃহত্যাগ করে অনাগারিকতাকে স্বীকার করেছিলেন। এই ঘটনাকে অভিনিষ্ক্রমণ বলা হয়। দীঘনিকায় এর মহাপরিনিব্বান সুত্তন্ত-তে বলা হয়েছে-
"একুনতিংস বয়সা সুভদ্দয়ং পব্বজিং কি কুসলানুএসী।
বসানি পঞ্চাস্সমাধিকানি যতো অহং পব্বজিতো সুভদ্দ।।"
তবে ললিতবিস্তর এবং বুদ্ধচরিত-এর কাহিনী অত্যন্ত কাল্পনিক বলেই প্রতীয়মান হয়। ললিতবিস্তর তৃতীয় শতাব্দীতে সর্বাস্তিবাদী নিকায়ের দ্বিতীয় বুদ্ধ জীবনী।
ললিতবিস্তর হতে অবগত করা যায় যে অনেক পূর্বজন্মের অর্জিত পুণ্যফলের প্রভাবে 'বোধিসত্ত্ব'র চিত্তে জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদির চিন্তার কারণে জীবনের অনিত্যতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি প্রকট হয়েছিল তথা তীব্র বৈরাগ্য এবং জিজ্ঞাসার প্রভাবে তিনি প্রকৃত মোক্ষলাভের সন্ধানে গৃহত্যাগ করেছিলেন। ললিতবিস্তর-এ আরও উল্লেখ আছে, তিনি ব্রহ্মর্ষি রেবতের আশ্রমেও অবস্থান করেছিলেন। অশ্বঘোষ-এর বুদ্ধচরিত-এ অলাঢ় কালাম-এর উল্লেখ পাওয়া যায়। কালাম-এর বিষয়ে নিকায় গ্রন্থে (অরিজিন অফ্ বুদ্ধিজম্, পৃ. ৩৭৭-৩৭৮) এইরূপে সূচনা পাওয়া যায় যে তিনি বোধিসত্ত্বকে 'আকিঞ্চনায়তন' নামক 'অরূপ সমাপত্তি'র শিক্ষা প্রদান করেছিলেন। কিন্তু অলাঢ় কালাম এবং উদ্দক রামপুত্রের মতাদর্শ বোধিসত্ত্বের নিকট মোক্ষলাভের প্রশ্নে ব্যর্থ বলে মনে হওয়ার কারণে তিনি তা পরিত্যাগ পূর্বক শিশুকালে অনুভূত ধ্যানকে স্মরণ করলেন এবং সেই ধ্যানকেই সম্বোধি লাভের ক্ষেত্রে নির্ধারণ করলেন। "তস মস্তমেতদহোসি অভিজানাভি খো পনাহং পিতু সক্কস্স কম্মন্তে সীতায় জম্বুচ্ছায়ায় নিসিন্নো বিবিচ্ছেব কামেহি... পঠম ঝানং উপসম্পজ্জ বিহরতা সিয়া নু খো এসো ময়ো বোধায়াতি তস্স মে সতানুসারি বিজানং অহোসি এসো ব মগ্লো বোধয়তি।” (মজ্জিম নিকায়, ১ম খণ্ড, পৃ. ২৪৭)।
বুদ্ধের জীবনী গ্রন্থ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় সুত্তপিটকের মধ্যম নিকায়ের প্রথম ভাগ মূল-পঞ্চাশ ২৬ নং সূত্র অরিয়পরিয়েসন সুত্তে।
উত্তরকালীন বৌদ্ধ পরম্পরা অনুসারে ধ্যান সংলগ্ন বোধিসত্ত্বকে মার এবং তাঁর সেনাদলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছিল। পালি বৌদ্ধগ্রন্থে 'মার'-এর উল্লেখ অবশ্যই পাওয়া যায় কিন্তু সম্বোধি প্রাপ্তির ক্রমবদ্ধ বিবরণে মার বিজয়ের স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় না। এই প্রসঙ্গে রিস্ ডেভিডস্-এর অভিমত হল- 'মার'-এর কথা একটি আধ্যাত্মিক বিষয়ের বাহ্য ইতিবৃত্ত রূপে চিত্রিত হয়েছে। পালি সাহিত্যে 'মার'-কে কাম, মৃত্যু অথবা সাংসারিক প্রলোভন রূপে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে এই বিষয়টি স্পষ্টতর হয় যে জ্ঞানপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই সাংসারিক আকর্ষণের সঙ্গে যে আধ্যাত্মিক অন্তর্দ্বন্দ্ব অনিবার্য হয়, তাকেই মার সংসর্গের কথা নামক একটি কল্পিত নাটকীয় বর্ণনা রূপে প্রস্তুত করা হয়েছে।
অতএব অতিশয় মূল্যবান, ত্রৈধাতুবিরক্ত, অনুত্তর শান্তিদিগবেশী বোধিসত্ত্ব চতুর্থ ধ্যানে তাঁর বিশুদ্ধ এবং নিশ্চল চিত্তকে অভিনিহার দ্বারা রাত্রির তৃতীয় যামে তিন বিদ্যাকে প্রাপ্ত করে ঊষাকালে সর্বজ্ঞ সম্বুদ্ধ হন।
বুদ্ধঘোষ অনুসারে সম্বোধি লাভের পর বুদ্ধের প্রথম বচন ধম্মপদ-এর এই গাথাতে সংরক্ষিত আছে- "অনেক জাতি সংসারং সংদ্ধাবিস্সং অনিব্বিসং গহকারকং গবেসন্তো দুক্খা জাতি পুনপ্পনং। গহকারক দিট্ঠোসি পুনগেহং ন কাহসি সব্বাতে ফাসুকা ভগ্গা গহকুটং বিসঙ্খিতং বিসংঙ্খারগতং চিত্তং তণ্হানং খয়মজ্ঝগা।।"
বিনয় অনুসারে সম্বোধিলাভের পরে চার সপ্তাহ পর্যন্ত বুদ্ধ বিমুক্তি সুখ প্রতিসংবেদী হয়ে বজ্রাসনে (বর্তমান বিহার রাজ্যের বুদ্ধগয়ার মহাবোধি বৃক্ষের সন্নিকটে) উপবিষ্ট ছিলেন। মজ্ঝিমনিকায় (খণ্ড ১, পৃ. ২১৮-২১৯) এবং সংযুক্ত নিকায় (খণ্ড ১, পৃ. ১৩৬-১৩৯) হতে এই তথ্য পাওয়া যায় যে সম্বোধি লাভের পর বুদ্ধের মনে এই ভাবনার উদয় হয়- "অধিগতো খো ম্যায়ং গম্ভীরো দুদ্দসো দুরানুবোধো সন্তো পনীতো অতক্খাবচরো নিপুণো পণ্ডিত বেদনীয়ো।। আলয় রামা খো পনায় পজা আলয়রতা আলয়সম্মুদিতা। আলয়রামায়খো পন পজায়... দুদ্দসং ইদং ঠানং যদিদং ইদপ্পচ্চয়তা পটিচ্চসমুপ্পাদো, ইদং নি খো ঠান যদ্দুসং যদিদং... নিব্বানং। অহং চেব খো পন ধম্মং দেসেয়্যং পরে চ মে ন আজানেয্যুং খো মস্স কিলমথো,... বিহেসা।"
পরম্পরা অনুসারে বুদ্ধের এই অনৌৎসুক্যকে অবলোকন করে ব্রহ্মা তাঁর সম্মুখে প্রকট হলেন এবং ভগবান বুদ্ধকে বন্দনা জ্ঞাপন পূর্বক বললেন- 'হে মহাকারুণিক আপনি ধর্মময় প্রাসাদ হতে শোকাবতীর্ণ জনগণকে অবলোকন করুন এবং ধর্মের উপদেশ প্রদান করুন, কারণ আপনার ধর্মদেশনা উপলব্ধি করার মতো অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তিও সেখানে উপস্থিত আছেন।' তখন ব্রহ্মার এই যাচনা শ্রবণ করে বুদ্ধ জীবকুলের প্রতি করুণার বশবর্তী হয়ে ধর্মদেশনা প্রদান স্বীকার করলেন। বস্তুত এই বিষয়টি মহাযান সিদ্ধান্তের আধ্যাত্মিক বিষয় রূপে গ্রহণ করা উচিত।
ভগবান বুদ্ধ তাঁর প্রথম ধর্মদেশনা ঋষিপত্তন মৃগদাব (বর্তমান উত্তর প্রদেশের সারনাথ)-তে পঞ্চবর্গীয় ভিক্ষুদের প্রতি প্রদান করেছিলেন, যা 'ধর্মচক্র প্রবর্তন' নামে খ্যাত।
"যে ধম্মা হেতুপ্পবভা তেসং হেতুং তথাগতো আহ তেসং চ যো নিরোধ এবং বাদী মহাসমনো।।"
বৌদ্ধ পরম্পরাতে সেই সকল স্থানের নাম প্রদত্ত হয়েছে, যেখানে ভগবান বুদ্ধ প্রতিবর্ষ বর্ষাবাস ব্যতীত করেছিলেন। তার সূচি এইরূপ-
১. প্রথম বর্ষাবাস বারাণসীতে; ২-৪. দ্বিতীয় বর্ষাবাস হতে চতুর্থ রাজগৃহতে; ৫. পঞ্চম বর্ষাবাস বৈশালীতে; ৬. ষষ্ঠ বর্ষাবাস মঙ্কুল গিরিতে; ৭. তাবতিংস লোকে; ৮. সুসুমার (শিশুমার) গিরির নিকট ভর্গ প্রদেশে; ৯. কৌশাম্বীতে; ১০. পারিলেয্যক বনে; ১১. নালাগ্রামে; ১২. বেরঞ্জতে; ১৩. চালিয়গিরিতে; ১৪, শ্রাবস্তীতে; ১৫. কপিলবাস্তুতে; ১৬. আলবীতে; ১৭. রাজগৃহতে; ১৮. চালিয়গিরিতে; ১৯. রাজগৃহতে। অতঃপর তিনি শ্রাবস্তীতে বর্ষাবাস ব্যতীত করেছিলেন। এই বিষয়ে তাবতিংস লোকের উল্লেখটি মহাযান পরম্পরা বলেই প্রতীয়মান হয়। কারণ প্রাচীন গ্রন্থে এর উল্লেখ পাওয়া যায় না। (অরিজিন অফ বুড্ডিজম্, পৃ. ২২৭-২২৮)।
সম্বোধি লাভের পর ৮০ বর্ষ আয়ু পর্যন্ত ভগবান বুদ্ধ সদ্ধর্মের প্রচার-প্রসার কার্যে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জনপদ পরিভ্রমণ করেছিলেন।
বুদ্ধচরিত মহাকাব্যের 'লুম্বিনী যাত্রিক' নামক সপ্তদশ সর্গে ভগবান বুদ্ধের সদ্ধর্মের প্রচার-প্রসার কার্যের বিবরণ পাওয়া যায়। যা এইরূপ- বুদ্ধ উদায়ী এবং ছন্দককে দীক্ষা দিয়া ভিক্ষু করিলেন এবং সেই বন হইতে (রাজগৃহের নিকট বেণুবন) ভিক্ষুগণসহ প্রস্থান করিলেন। বুদ্ধ বহুস্থান পরিভ্রমণ করিয়া বহু ব্যক্তিকে ভিক্ষু করিলেন। ১৮।।
মহাপরিনির্বাণ সূত্র হতে এই তথ্য পাওয়া যায় যে ভগবান বুদ্ধ কুশীনগরের নিকট শালবনে ভিক্ষুসংঘের উপস্থিতিতে "বয় ধম্মা সংখারা অপ্পমাদেন সম্পাদেথা”-এই অন্তিম বাণী প্রদান পূর্বক মহাপরিনির্বাণে প্রবেশ করেছিলেন।
"... তস্মতিহানন্দ অত্তদীপা বিহরথ
অত্তসরনা ন অনঞঞসরণা,
ধম্মদীপা ধম্মসরনা ন অনঞঞসরণা।।"
এই অত্যন্ত ধার্মিক ভাষণে ভগবান বুদ্ধের ব্যক্তিত্বের অদ্ভুত রূপ সজীবতর হয়ে উঠেছে।
শ্রী দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় বিরচিত 'ভগবান তথাগত বুদ্ধ' নামক গ্রন্থে ভগবান বুদ্ধের অহিংসা, আধ্যাত্মিকতা এবং শিল্পচেতনার বিষয়টি অত্যন্ত সুচারুরূপে পরিস্ফুট হয়েছে। সুতরাং আমার পূর্ণ বিশ্বাস এই যে গ্রন্থটি উৎসাহী পাঠক তথা বিদ্যার্থীগণের নিকট অতিশয় লোকপ্রিয় হবে।
ভবতু সব্ব মঙ্গলং
সুমনপাল ভিক্ষু
প্রভাষক, পালি বিভাগ এবং বৌদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগ
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ও
সংস্কৃত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments:
Post a Comment