প্রাচীন চিকিৎসা শাস্ত্র একটি ফুল্লকুসুমিত বৃক্ষ সদৃশ এবং প্রাচীন ঐতিহ্য থেকে রসধারা সংগ্রহে রচিত হয়েছে পরবর্তীকালের চিকিৎসা শাস্ত্র । চিকিৎসকদের সমাজে জনপ্রিয়তা ছিল । সংস্কৃত শব্দ বৈদ্য পালিতে বেজ্জ, চিকিৎসা-তিকিচ্ছা, ভীষক-ভিসক্কো এবং শল্যবিদ-সল্লকত্তো বা surgeon। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি সম্পন্ন চিকিৎসকদের নাম পালি সাহিত্যে পাওয়া যায়; যাঁরা চিকিৎসা শাস্ত্রে ভারতের কৃতিত্ব তুলে ধরেছেন।এঁরা চিকিৎসকদের পূর্বাচার্য ছিলেন "তিকিচ্ছানং পুব্বকা আচরিয"। এঁদের মধ্যে জীবক ছিলেন বৌদ্ধ চিকিৎসা জগতে একটি নক্ষত্র প্রতিভা। তিনি রাজগৃহের রূপজীবা শালবতীর পুত্র ।মানবধর্মের উম্মোচনে এবং সর্বোপরি চিকিৎসকোচিত অজস্রগুণের সমারোহে তিনি ছিলেন পরম প্রতিভার আগ্নেয় সাক্ষর।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে জ্ঞান ও মানব কল্যাণের সংযোজন ঘটিয়ে তিনি সে যুগের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসের সমুন্নত মহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন । মানব সভ্যতার যা কিছু উৎকৃষ্ট উপাদান, উজ্জ্বল আবিষ্কার ও উত্তরাধিকার ভারতীয় মনীষীদের ধ্যানে, জ্ঞানে, মননে এবং কর্মে তা অনুরণিত । বিশ্বমানবের মঙ্গলাকাঙ্ক্ষার বার্তাবাহীরূপে তা দেশে দেশে পরিভ্রমণ করেছে। ভারতীয় চিকিৎসা বিদ্যার মধ্যেও বিবৃত হয়ে আছে বিশ্বমৈত্রী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রীতির পরিচয় ।
বৌদ্ধ যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞান কুলকুণ্ডলীর ম্যাজিক, তান্ত্রিক সাধনার রোডম্যাপের স্কেচ এবং ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের উত্তরাধিকার জীবক। বুদ্ধকে জীবক চিকিৎসা করতে পেরে অমরত্ব পেয়েছেন। বৌদ্ধ সাহিত্যে সর্বত্র জীবকের প্রোজ্জ্বল উপস্থিতি বিদ্যমান ।
No comments:
Post a Comment