অভিমত
সংঘনায়ক আনন্দমিত্র মহাথের (১৯০৮-১৯৯৯) আমাদের এই অতীত গৌরবময় ঐতিহ্যের একজন সার্থক উত্তরসাধক। বুদ্ধের ধর্ম ও বিনয়ে অসাধারণ
জ্ঞান, ধ্যানময় জীবন এবং অনুপম চারিত্রমাধুর্যে তিনি বাঙালি বৌদ্ধ সমাজে বৌদ্ধ জীবনাদর্শের প্রতীকরূপে পরিচিত। এই উপমহাদেশের গৌরবদীপ্ত ভিক্ষুদের মাঝে তাঁর আসন আপন বৈশিষ্ট্যে দেদীপ্যমান।
ভদন্ত আনন্দমিত্র একাধারে বিদর্শন সাধক, শাস্ত্রবিদ, লোক শিক্ষক, সমাজ সংস্কারক ও সুলেখক। 'সত্য-সংগ্ৰহ’ ‘সত্য-সাধনা’ ‘অমৃতের সন্ধানে', ‘আনন্দলোকে’, ‘ধর্মসুধা’, ‘মহামঙ্গল’, ‘উপাসনা’, ‘প্রজ্ঞাসাধনা’, ‘বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম’
Pre-eminence of Buddha and His Dhamma, Buddhism-A Human Religion নামে তাঁর লেখা গ্রন্থগুলো তাঁর ধ্যানলব্ধ জ্ঞানের ও পাণ্ডিত্যের পরিচায়ক। তাঁর লেখার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের বহুল উদ্ধৃতি লক্ষ্য করার মতো। এতে সহজেই বোঝা যায় রবীন্দ্র সাহিত্যেও তাঁর অপরিসীম দক্ষতা ছিল।
সর্বোপরি তাঁর ছিল এক সমাজদরদী মন। যে সমাজে তিনি জন্মেছেন সে-ই সমাজকে একটি আদর্শ সমাজে পরিণত করার লক্ষ্যে তিনি সারা জীবন প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তাঁর এই সমাজদরদী মনের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর লেখা এই পুস্তিকা দুটিতে— ‘আমার সমাজ’ ও ‘আদর্শ বৌদ্ধ জীবন'। তাঁর প্রথম প্রকাশিত পুস্তিকা ‘আমার সমাজ' (১৯৫৫)। পরিণত বয়সে তিনি লিখলেন ‘আদর্শ বৌদ্ধজীবন (১৯৭৭)। বাঙালি বৌদ্ধদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে বহুবিধ সমস্যা ও অজ্ঞতা সম্বন্ধে তাঁর পরিণত চিন্তা চেতনায় ‘আদর্শ বৌদ্ধজীবন’ বইটি সমৃদ্ধ। বইটির নিবেদন-এ তিনি আশা করেছেন : “উচ্চাকাঙ্ক্ষা উদ্যম এবং অধ্যবসায় প্রভৃতি গুণসম্পন্ন ব্যক্তির সম্যক মার্গের জ্ঞান না থাকলে কুমার্গে পরিচালিত হয়ে অধঃপতিত হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। সেজন্য মহাজ্ঞানী বুদ্ধের শরণাগত ব্যক্তিদের আদর্শ বৌদ্ধজীবন যাপনের উপায় এ পুস্তিকায় দেখানো হয়েছে। উন্নতিকামী বিচারশীল সর্বমানব প্রজ্ঞাবানদের জ্ঞানগর্ভ উপদেশে স্থিত হয়ে আপন আপন যোগ্যতানুযায়ী সৎকর্মের মাধ্যমে আত্মজীবনকে মহত্ত্বের দিকে পরিচালনা করতে পারলে এ শ্রেষ্ঠ মানবজীবন লাভ সার্থক হয়।
চিকিৎসককে যেমন মানব হিতার্থে
কষ্টদায়ক ইনজেকশান এবং অস্ত্রপ্রয়োগও করতে হয়, তেমন সমাজের কল্যাণের জন্য কোনো
কোনো ক্ষেত্রে আমাকে অপ্রিয় সত্যও বলতে হয়েছে। কাকেও নিন্দা বা অপদস্থ করবার
ইচ্ছা আমার মোটেই নেই। ... যদি কোনো মহাপ্রাণ শিক্ষিত যুবক
বুদ্ধদেশিত ধর্ম-বিনয়ের স্বরূপ বুঝে শ্রেষ্ট ভিক্ষুজীবনকে বরণ করে অপ্রমেয়
আত্মহিত ও পরিহত সম্পাদন করতে পারেন এবং কোনো কোনো গৃহস্থ আদর্শ বৌদ্ধ হয়ে উন্নত
জীবন যাপন করতে সক্ষম হন তবে আমার পরিশ্রম সফল হয়েছে মনে করব। (আদর্শ বৌদ্ধ
জীবন/নিবেদন/পৃ.৬-৭/প্রকাশক/অখি
প্রজ্ঞা-সাধনা ভন্তে আনন্দ মিত্র মহাথের কতৃর্ক প্রণীত। তিনি তাঁর প্রজ্ঞা-সাধনা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন- "পঞ্ঞ নরানং রতনং"। অর্থাৎ প্রজ্ঞা হল নরের রত্ন। রতিং উপপাদেতি বডঢেতী'তি রতনং " রতি (আনন্দ) উৎপন্ন ও বর্ধন করে অর্থে রত্ন।
চিত্তীকতং মহাগঘঞচ অতুত্থং দুল্ভলদস্সনং
অনোম সত্ত পরিভোগং রতনং তেন বুঢ্ডতি।
অর্থাৎ যা চিত্তপ্রসাধক, মহামূল্যবান, অতুলনীয় দুর্লভ -দর্শন এবং মহাপূণ্যবান অসাধারণ মানব -পরিভোগ্য, তা হল রত্ন।
বিশ্বে যত প্রকার রত্ন বিরাজিত আছে, তার মধ্যে প্রজ্ঞারত্নই হল মহামূল্যবান অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ। তবে প্রজ্ঞা -সাধনা অত্যন্ত দুষ্কর, শুধুমাত্র উত্তম ব্যক্তিবর্গই সেই সাধনায় মনোনিবেশ বা আত্ননিয়োগ করতে পারেন।
দানং শীলময় ক্ষান্তিবীর্য ধ্যানং তথা ভবান্।
প্রজ্ঞাপারমিতানং বীফ্য জিনবল্লোকমুত্তরেত্।।
সুতরাং এক অর্থে বলা যায় যে প্রজ্ঞা সাধনার শ্রেষ্ঠ এবং দুর্গম পথে যাত্রা সকলের পক্ষে সম্ভবপর নয়।
ত্রিপিটক বাগীশ্বর সাধক প্রবর ভন্তে আনন্দমিত্র মহাথের (মহাস্থবির) একজন স্বনামধন্য প্রতিভার ভিক্ষু। বৌদ্ধ সমাজ জীবনে ভগবান বুদ্ধ নিন্দিত বেশ কিছু মিথ্যাদৃষ্টির অনুপ্রবেশে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত এবং মর্মাহত হন। অতএব তিনি এর নিরসনার্থে এবং বৌদ্ধ জনসমাজকে সদ্ধর্মে স্থিত করার কার্যে ব্রতী হন এবং প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম গ্রন্থ 'আমার সমাজ' (১৯৫৩)প্রকাশ করেন। ১৯৭৩-৭৪ খ্রীঃ হতে তিনি পুনঃ বেশ কতকগুলি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। উক্ত গ্রন্থ সমূহ গুলি নিম্নরূপ-
সত্য সংগ্রহ (অনুবাদ), মহামঙ্গল (অনুবাদ), আদর্শ বৌদ্ধ জীবন, ধর্মসুধা, অমৃতের সন্ধানে, আনন্দলোকে, উপাসনা এবং বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম।
উক্ত গ্রন্থগুলির মূল উদ্দেশ্য হল- বৌদ্ধ সমাজের সার্বিক এবং মানবিক উন্নতি এবং জনগণের প্রত্যেককে চতুবর্গ ফল অনুপ্রাণিত ও যোগ্য করে তোলা।
বর্তমানে আমরা এমন এক জটিল আবর্তের পঙ্কে নিমজ্জিত হয়েছি যেখানে ধর্মমোহতা'র কারণে সদ্ধর্ম রক্ষা করার বিষয়টি একটি বিরাট প্রশ্ন চিহ্নের সম্মুখীন এসে দাঁড়িয়েছে। এই রূপে সন্ধিক্ষণে ভদন্ত আনন্দ মিত্র মহাস্থবির বিরচিত প্রজ্ঞা -সাধনা গ্রন্থটি বাস্তবিক অর্থেই প্রকৃত অর্থে মুক্তিমার্গ বলা যেতে পারে।
প্রজ্ঞা সাধনা সাধনার অর্থ হল পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পুনঃ পুনঃ অনুশাসন এবং পূর্ণতা সাধন বা বিকাশ।
অর্থঞোহর্থবিভাবনাং প্রকুরুতে বাচা অদৈশ্চামলৈ
দুঃখস্যােত্তরণায় দুঃখতিজনে কারুণ্যতস্তময়ঃ
ধর্মস্যৌত্তময়ানদেশিতবিধেঃ সত্ত্বেসু তদ্রামিষু,
শ্লিষ্টামর্মগতিং নিরুত্তর গতাং পঞ্চাত্মিকাং দর্শয়ণ্।।
ভগবান বুদ্ধ বলেছেন, পরিয়ত্তি ও প্রতিবেদ ভেদে বিবিধ ধর্মেও অনুশীলন এবং প্রজ্ঞালাভের বর্ধন শুধুমাত্র জন্যই প্রয়োজন হয়।
বোধিচর্যাবর্তার গ্রন্থে আচার্য শান্তিদেব বলেছেন,
"যদর্মেবদ্ ধর্মদোপসংহিতং
ত্রিধাতুসংক্লেশনিবর্হণং বচঃ।
ভবেচ্চ যচ্ছান্ত্যনুশংসদর্শকং
তদুক্তমার্ষং বিপরীতমন্যয়া।।"
ভগবান বুদ্ধ অন্যত্র বলেছেন, পরিশুদ্ধি বা ভব- দুঃখ মুক্তু বা নির্বাণ লাভ হয়। সমগ্র দুঃখের আত্যন্তিক নিরোধ প্রজ্ঞা সাধনায় সম্ভব। প্রজ্ঞাই বিমুক্তি, প্রজ্ঞাই বিচার।
ধর্ম কখনই হন্তারকের ভূমিকা গ্রহন করতে পারে না। অপর অর্থে বিশুদ্ধ ধর্মের মূল লক্ষ্য এবং প্রধান কাজ হল মনুষ্য সমাজের উন্নতি তথা বিকাশ সাধন। ধর্মমোহতার অর্থ হল অজ্ঞানতা। এইটা বিষধর সর্পের ন্যায় ভয়াবহ ও বিমদ সংকুল।
ধর্মকে সঠিকভাবে অনুশীলন তথা অনুগমন না করলে হিতের পরিবর্তে অহিতকর বা অমঙ্গল রূপে কার্যশীল হয়। এই অহিতকর বিষয়টি আজও কার্যশীল। এর মূল কারণ হল ধর্ম সম্পর্কে মনুষ্যের সম্যক জ্ঞানের অভাব।
ভন্তে আনন্দমিত্র মহাস্থবির প্রণীত প্রজ্ঞা সাধনা গ্রন্থটি কৃশকায় হলেও এর গুরুত্ব পরিমাপ করা বাস্তবিক অর্থে দুষ্কর এবং শ্রমসাধ্য। কারণ শীল, সমাধি এবং প্রজ্ঞা তিনটি সুদৃঢ় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ এই গ্রন্থে নিহিত আছে।
আচার্য নাগাজুন কৃত,' সুহৃল্লেখ 'গ্রন্থের 'শীল আচরণের মাহাত্ম্য ' (১১) (শীলনুমালনমাহাত্ম্যম্) প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-
স্ত্রিয়শ্চ পুরুষাশ্চাপি শীলমার্হতমাশ্রিতাঃ।
অষ্টাঙ্গ মার্গসংযুক্তা সন্গূমোসসংবৃত্তাঃ।। ১৯
তদা সৌম্য শুভে কামাবচরায্যে মনোরমে।
দেবলোকে জর্নিং লব্ধা দেবতুল্য ভবন্তি তে।।
শীলে সম্যক প্রতিষ্টা ব্যতীত মুক্তিমার্গের অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই শীল আধি পুনশ্চঃ শীল মধ্য কল্যাণ সমাধি লাভের সহায়ক।
"ধম্মসংগ্রহে ধম্মে কুসলাদিক তিকদুকেহি সংগেত্বা তে এব ধম্মে সুত্তন্তে খন্ধাদি বসেন বুত্তে বুত্তেং।"
সদ্ধর্মে জ্ঞানী হওয়ার প্রশ্নে মৈত্রী ও করুণাই হল মূল প্রতিপাদ্য বিষয় তা প্রজ্ঞার দ্বারাই সম্ভব হয়। প্রজ্ঞা ব্যতীত তা নিরর্থক।
আচার্য বুদ্ধঘোষ ' বিসুদ্ধিমগ্গ ' গ্রন্থে শীল নির্দেশ প্রসঙ্গে বলেছেন-
"সীলাদিসঙ্গহং খেমং, উজুং মগগং বিসুদ্ধিয়া।।
যথাভূতং অজানন্তা, সুদ্ধিকামা পি যে ইধ।
বিসুদ্ধিং নাধিগচ্ছান্তি, বায়মন্তা পি যোগিনো।।
তেসং পামোজ্জকরনং, সুবিসু্দ্ধবিনিচ্ছয়ং।"
শীল সর্বদোষ বিনাশক এবং সর্বগুন উৎপাদক- আর একেই শীলের সংক্ষপ্তি ফল রূপে অবগত করা উচিত। শীল বলতে বাক্য, সম্যক কর্ম এবং সম্যক আজীবিকাকেই বলা হয়। অপর অর্থে বলা যায় যে কায়বাক্ জনিত সর্বপাপ এবং অশোভনীয় আচরণ বর্জন পূর্বক উন্নতি মূলক কার্যে নিয়োজিত থাকাই হল 'শীল'।
ভগবান বুদ্ধ 'সোনদণ্ড সুত্ত'এ বলেছেন-
সীল পরিধোতা হি ব্রাহ্মণ, পঞ্ঞা, পঞ্ঞাপরিধোতাং সীলং যত্থ সীলং তত্থ পঞ্ঞা ; যত্থ পঞ্ঞা তত্থ সীলং। সীলবতো পঞ্ঞা, পঞ্ঞবন্তো সীলং। সীলপঞ্ঞঞ্চ পণ লোকস্মিং অগ্গমক্খায়তীতি।" অর্থাৎ হে ব্রাহ্মণ! প্রজ্ঞাশীল পরিধোত এবং শীল প্রজ্ঞাপরিধৌত। যথায় শীল তথায় প্রজ্ঞায়; যথায় প্রজ্ঞা তথায় শীল। শীলবানেরই প্রজ্ঞা এবং প্রজ্ঞাবানেরই শীল। জগতে শীল এবং প্রজ্ঞাই অগ্র বলে কথিত।
" কুলীণো বা সুরুপো বা মনুষ্যাে বা বহুশ্রুতঃ।
প্রজ্ঞা - শীলপ্রহীনশ্চেন্ন সম্মানমিহাহতি।। ৫২।।
পরং যঃ শীলসম্পন্নঃ প্রজ্ঞায়ানং পরিনিষ্ঠিতঃ।
অনৈ্যর্গুনৈর্বিহীনোহপি লোকেহস্মিন্ পূজ্যতে সদা।।৫৩। সুহৃল্লেখ, প্রজ্ঞা- শীলবিহীনো ন সৎকরণীয়ঃ (২৮)।
ধর্ম এবং ধর্মান্ধতা'র বিষয়টি অত্যন্ত জটিল। কারণ পৃথিবীতে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সংখ্যা প্রায় ১২টি। আবার এগুলি মতাদর্শগত কারণে অনেক গুলি ভাগ-উপবিভাগে বিভক্ত। তবে এক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট এবং বিজ্ঞান বিভাগ ভিত্তিক ধর্ম হল বৌদ্ধধর্ম দর্শন। ভগবান বুদ্ধ হলেন বৌদ্ধ ধর্মের মূলপ্রবর্তক এবং তাঁর সিদ্ধান্ত সমূহের সংকলন হল ত্রিপিটক (বিনয়, অভধর্ম ও সুত্ত)।
ভগবান বুদ্ধের ধর্ম বিনয়ে স্বখ্যাত সুন্দর পরিপূর্ণভাবে ব্যাখ্যাত।
সুত্তন্তেসু অসন্তেসু সমুট্ঠে বিনয়স্থি চ।
তমো ভবিসসতি লোকো সুরিয়ে অত্থঙ্গগে যথা।
সুত্তন্তে রক্খিতে সন্তে পটিপত্তি হোতি রক্খিতা।
পটিপত্তিয়ং ঠিতো ধীরো যোগক্খেমা ন ধংসতি।।
অঙ্গুত্তর নিকায় অট্ঠকথা, পৃঃ ৩৩-৩৪।
মজ্বিম নিকায় 'এর কালাম সুত্তে বলা হয়েছে- জনশ্রুতিতে, পুরুষ পরম্পরা আগত বলে অন্ধভক্তি বিশ্বাসে, তর্ক সম্মত বলে প্রসিদ্ধ সন্ন্যাসীর ন্যায় বলেন, নিজের গুরু বলেছেন এই কথা বলেন, এখন কি নিজের মতের সঙ্গে মিল আছে বলে কোনও ধর্ম(মতবাদ) গ্রহণ করবে না। যা অকুশল সদোষ এবং বিজ্ঞ নিন্দিত, যার সেবায় নিজের ও পরের অহিত এবং দুঃখ বধিত হয় বলে বিচার - বুদ্ধিতে তা বর্জনীয়; তদ্বিমরিতই সেবনীয়।"
ধম্মা তি সামঞ্ঞতো অধিট্ঠনং তং অধিকপ্পৃত্বা বিস্সেবচনং কুসলাকুসলাব্বাকতা তি। তথা কুসলা ধম্মাতি সামঞ্ঞতো অধিট্ঠনং তং অধিকপ্পেত্বা কামাবচরং সোমনস্সসহগতংতি আদি বিসেসবচনং। অকুসলা ধম্মাতি আদীসু পি এসেব নয়োতি অয়ং অধত্তট্ঠযো হারো। অভিধম্ম মূলটীকা, তিকমাতিকাপদবন্ননা, পৃঃ৬১।
ভগবান বুদ্ধ স্বয়ং নিজের প্রতি অহংবোধ রূপে সদ্ধর্মকে আবিষ্কার বা বিকাশ করেন নি, তিনি বারংবার ভিক্ষুগণকে বলেছিলেন-
"তাপচ্ছে চ্চ নিকর্ষাৎ সুবর্ণমিব পণ্ডিত
পরীক্ষ ভিক্ষবো গ্রাহ্যম্ সদ্বচো নতু গৌরবৎ।"
অর্থাৎ হে ভিক্ষুগণ! পণ্ডিতবর্গ যেমন স্বর্ণকে অগ্নিতে দগ্ধ করে, অস্ত্রে ছেদন করে এবং কষ্টিপাথরে ঘষর্ণ দ্বারা পরীক্ষা পূর্বক'ই গ্রহণ করে, তোমরাও আমার বাক্যকে ঠিক তেমনভাবে পরীক্ষা করেই গ্রহণ করবে- আমার গৌরবান্বিত হয়ে নয়।
বুদ্ধের ধর্ম ও বিনয় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানের অভাবে অজ্ঞ ব্যক্তিরাই সার( সদ্ধর্মের মূলগত তত্ত্ব) কে বাদ দিয়ে অসারকে (অবতার বাদ) গ্রহণ করে অর্থহীন বিষয়গুলিকে উপস্থাপন করেছেন।
সঞ্চেতনীয়ং কর্ম কৃত্বোপচিত্য নরকেষূপপদ্যতে। কথং চ ভিক্ষবঃ সঞ্চেতনীয়ং কর্ম কৃতম্ ভবত্যুপচিত্তম। ইহৈকত্যােহভিধ্যাত্থু উনতি ব্যাপন্ন চিত্তো যাবত্ মিথ্যাদ্দষ্টি খলুভিক্ষব ইহৈকত্যো ভবতি বিপরীতদর্শী (মজিঝম,ব্যাখ্যা ৪০০.৯)।"
বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম: ভদন্ত আনন্দ মিত্র মহাথের-
তথাগতশ্চর্য প্রজানমানঃ সর্বেষ সত্ত্বান পুদগলাণাম্।
বহুপ্রকারং হি ব্রবীতি ধর্ম নিদর্শয়ন্তো ইমমগ্রবোধিম্।।৬২। সদ্ধর্মপুণ্ডরীক, অধিমুক্তিপরিবর্ত,পৃ. ১২৭।
ভদন্ত আনন্দমিত্র মহাথের বিরচিত বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম গ্রন্থটি অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থ। এই গ্রন্থে সর্বোমোট ২টি প্রবন্ধ ও পরিশিষ্টে একটি ক্ষুদ্র পত্র প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থের প্রকাশকাল, বৈশাখী পূণিমা, ১৯৮৬ অর্থাৎ ৩৭বৎসর পূর্বে)।
প্রথম প্রবন্ধ (বুদ্ধ এবং বৌদ্ধ ধর্মের বৈশিষ্ট্য) টি প্রকাশিত হয়েছিল ধর্মসুধা' নামক পুস্তকে। এই প্রবন্ধে আলোচিত হয়েছে বুদ্ধ ও বৌদ্ধ ধর্মের মূলগত বৈশিষ্ট্য এবং কেন এইধর্ম ঈশ্বরতত্ত্বে বিশ্বাসী না হয়েও বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ মনুষ্যের ধর্ম।
দ্বিতীয় প্রবন্ধের প্রতিপাদ্য বিষয় হল নিকায় ভেদ অর্থাৎ মতাদর্শগত বিতর্ক বা মহাবিতর্ক। তবে এখানে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে কেন এই নিকায় ভেদ? এর যৌক্তিকতা বা অযৌক্তিকতা'র বিষয়টি কোথায় নিহিত আছে।
বিসুদ্ধিমগগ মহাটীকাতে স্পষ্টভাবে ভগবান বুদ্ধের ধর্মকে মূল অর্থে বিভজ্জবাদ' বলা হয়েছে।
এত্থ সংখেপেন বুত্তানং খন্ধাদীনং বিজ্জনং বিভঙ্গো। সো সো বিভঙ্গো পকতো অধিকতো যস্সা পালিয়া, সা বিভঙ্গপপকরণংতি বুচ্চতি। বিসু.মহা.টী..পৃ. ৮৬।
স্থবিরবাদ নিকায়'এর ধম্মচক্কপ্পবত্তন সুত্তং'তে বলা হয়েছে- দ্বে মে ভিক্খবে! অন্তা পব্বজিতেন ন সেবিতব্বা কত মে দ্বে? যো চাযং কামেসু কামসুখল্লিকানযোগো গম্মো, হীন গম্মো, পোথুজ্জনিকো,অনরিযো, অনতথসংহিতো, যো চায়ং অত্তকিলমমনুযোগো দুক্খো অনরিয়ো, অনত্থসংহিতো।
বৌদ্ধধর্মের উৎপত্তি ও বিকাশের প্রশ্নে কিন্তু কোন তথাকথিত অতিপ্রাকৃত শক্তি বা সত্ত্বার অস্থিত্ত্ব স্বীকার্য নয়। এই ধর্মোৎপত্তির মূল কথা হল করূণা এবং মৈত্রী। এ ধর্মের সারকথা হল এহি পাসসিকো'। অপর অর্থে প্রজ্ঞামূলক হওয়ার কারণে " পচ্চাত্তং বেদিতব্বো বিঞ্ঞহি।" অর্থাৎ মূল সূত্র হল কার্যকারণনীতি বা প্রতীত্যসমুৎপাদ। সুতরাং এই নীতির কারণেই বৌদ্ধ ধর্ম জগতে অসদৃশ্য ও অদ্বিতীয়।
"আনন্দ লোক" ভদন্ত আনন্দ মিত্র মহাথের:
স স্মৃতেরনুপস্থানাদ, অপ্রস্থানাত স্মৃতেস্তথা।
বিপর্যয়ে পতত্যত্র দোষদৃষ্টি চতুষ্টয়ে।।৯৩।।
বুদ্ধেনোদ্বোষিতম- বোধ্যং তত্ত্বমিদং পরম।। ৯৫।। সুহৃল্লেখ, ৯৩-৯৫(কারিকা)ঌ।
আনন্দ লোক এর বিষয়বস্তু বুদ্ধগুণ। অনেকের হয়তো বিষয়টি জানা আছে যে বুদ্ধের নয় গুণ,ধর্মের ছয়গুণ এবং সংঘের নয় গুণ। কিন্তু ভগবান বুূ্দ্ধের নয় গুণের মর্মার্থ এবং ব্যাখ্যা অনেকেই অবগত নয়। তথাগত স্বয়ং এ প্রসঙ্গে বলেছেন- বুদ্ধোপি বুদ্ধস্স ভনেয্য বন্নংকপ্পম্পিচে অঞ্ঞ অভাসো মানো। খীযেম কপ্পো চির দীঘমন্তরে, বন্নং ন খীযেম তথাগতসস।"
অর্থাৎ, যদি একজন সম্বুদ্ধের গুণাবলী সমূহ বর্ণনা করেন তাহলে সুদীর্ঘ কাল পরে একসময় কল্প শেষ হতে কিন্তু বুদ্ধগুণ বর্ণনা শেষ হবে না।
হিতাশংসনমাত্তেন বুদ্ধপূজা বিশিষ্যতে
কিং পুনঃ সর্বসত্ত্বানাং সর্বসৌখ্যার্থমুদ্যমাত্।।
পুনঃ বলা হয়েছে -
মুচ্যমানেষু সত্ত্বেষু যো মে প্রমোদ্যসাগরঃ
তেনৈব ননু পর্যাপ্তং মোফেনারসিকেন কিম্।।
বোধিচর্যাবর্তার,১.৭২।
বুদ্ধানুস্মৃতি ভাবনাকে কিভাবে বিদর্শনে উন্নীত করে লোকোত্তর জ্ঞানের অধিকারী হওয়া যায় তার বর্ণনা ও পর্যায়ক্রমে সংক্ষিপ্তাকারে ব্যখ্যাত হয়েছে।
এবম অচিন্তিযো বুদ্ধো, বুদ্ধ ধম্মো অচিন্তিযো
অচিন্তিযেসু পসান্নাসং বিপাকো হোতি অচিন্তিযো।
বুদ্ধানুস্মৃতির অর্থ হল বুদ্ধ+অনু+স্মৃতি - বুদ্ধ পুনঃ পুনঃ ভাবনায় উৎপন্ন স্মৃতি। বুধ ধাতু হতে বোধি এবং বুদ্ধ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। সুতরাং বুদ্ধ অর্থ জ্ঞাত জাগ্রত বা বিকসিত।
অহং জরামৃত্যুভয়ং বিদিত্বা মুমুফয়া ধর্মমিমং প্রপন্নঃ
বন্ধূন্ প্রিয়ানশ্রুমুখান্ধিহায় প্রাগেব কামানশুভস্য হেতূন।। বুদ্ধচরিত, বুদ্ধত্বপ্রাপ্তি,সর্গ-১৪।
বুদ্ধ ৪ প্রকার:
১. শ্রুত বুদ্ধ- বিবিধ শাস্ত্রে মহাজ্ঞানী। অর্থকথাসহ ত্রিপিটক শাস্ত্রে পণ্ডিত ভিক্ষু।
২. শ্রাবক বুদ্ধ- রূপরাগ অরূপরাগ, মান -ঔদ্ধত্য এবং অবিদ্যা এই পঞ্চ উর্দ্ধভাগীয় সংযোজন ছেদনকারী অর্হত্ব (চারসত্য বুদ্ধ)
৩. সম্বুদ্ধ - দশকল্প এবং সর্বজ্ঞতা ব্যতীত যিনি অশ্রুত বিষয়ে সত্য সমূহ স্বয়ং সম্যক রূপে জ্ঞাত (প্রত্যেকবুদ্ধ) হন।
৪. সম্যক সম্বুদ্ধ - দশকল্প ও সর্বজ্ঞতা জ্ঞানে বিভূষিত এবং অশ্রুত বিষয়ে সত্যসমূহ স্বয়ং সম্যকভাবে অবগত হন।
বুূদ্ধ জ্ঞান অনন্তংহি আকাশং বিপুলং সময়।
ক্ষপয়েৎ কল্পভাযন্তং ন চ বুদ্ধজ্ঞানক্ষয়ঃ।।
বুদ্ধচরিত, মারকি পরাজয়, সর্গ -১৩।
তথাগত সর্বমোট ৮টি কারণে ভগবান তথাগত হন।
"তথা আগতোতু - তথাগত " অর্থাৎ পূর্ব বোধিসত্ত্বগণের ন্যায় তিনিও দান পারমী ইত্যাদি ১০ পারমী ত্রিবিধাকারী পরিপূর্ণ করেন এবং বুদ্ধ করণীয় অন্যান্য ধর্মসহ ৩৭ প্রকার বোধিপক্ষীয় ধর্ম উৎপন্ন তথা বর্ধন করেন, এই কারণেই সর্বজ্ঞতা অর্জন পূর্বক সম্যক সম্বুদ্ধ হয়েছেন।
যথেব লোকমহি বিপসসী আদয়ো
সববঞঞূভাবং মুনয়ো ইধাগতা
তথা অযং বুচ্চতি তেন চকখুমা।।"
ধম্মসমুচ্চয়, পৃঃ ২২৩-২২৮।
আমাদের সমাজ-ভন্তে আনন্দ মিত্র মহাথের কতৃর্ক প্রণীত। তিনি তাঁর এই গ্রন্থটি নিদেন পক্ষে পুস্তক না হয়েও আক্ষরিক অর্থে ধর্মীয় যুক্তিতে পুষ্ট। কারণ বঙ্গীয় বৌদ্ধ সমাজের হিতার্থে এবং সদ্ধর্ম রক্ষার সমর্পনে তিনি ( ভান্তে আনন্দমিত্র) নির্ভীক চিত্তে সমাজের পৃষ্ঠে কশাঘাত করেছেন।
গ্রন্থটি সর্বমোট ৪ অংশে বিভক্ত। ১. ভিক্ষু এবং বড়ুয়া বৌদ্ধ, ২. দায়ক, ৩. বিহার দায়ক এবং, ৪. গ্রাম্য সমাজ। গ্রন্থের প্রতিটি অংশই বঙ্গীয় বৌদ্ধগণকে অনুশীলন করা অবশ্য কর্তব্য।
প্রথম অধ্যায়ে গ্রন্থকার'এর একটি যুগোপযোগী মন্তব্য দৃষ্ট হয়- " অন্যায়কে বাদ দিয়ে ন্যায়ের পথে বিচরণ করাকেই বলে ধর্ম পথে বিচরণ। ধর্মকে বাদ দিলে মানুষ পশুর পর্যায়ে পড়ে। গ্রন্থকার বৌদ্ধগণকে প্রব্রজিত ও গৃহীভেদে বিভক্ত করে যুক্তি-বুদ্ধি দ্বারা প্রবজ্যা জীবনকেই শ্রেষ্ঠ অর্থে প্রতিপাদন করেছেন। তাঁর যুক্তি সকলেই জ্ঞানী হয় না, কেউ কেউ হয়।
দিট্ঠেব ধম্মে যো অত্থো যো চ অত্থো সম্পরাযিকো অত্থভিসমযা ধীরো পন্ডিতো'তি পবুচ্চতি।
অর্থাৎ যিনি ইহজীবনে ও জন্ম জন্মান্তরে মঙ্গল উপলব্ধি করতে পারেন, তিনিই পণ্ডিত।
ভগবান বুদ্ধ বিহার দানের ফল অপ্রমেয় বলে আখ্যা করেছেন।
বিহারদাণসস পণানিসংসং কো নাম বত্তুং পুরিসো সমত্থে।
অঞঞএ বুদ্ধা লোকনামা যুত্তো মুখানং নহতেন চা'পি।।" -বেণুবনদানানুমোদন সুত্ত।
সত্য সাধনা-ভদন্ত আনন্দ মিত্র মহাথের,
সত্যের নিগূঢ় অর্থ হল " সত্যবোধ যুক্তি বুদ্ধি বিচারের উর্দ্ধ। সত্য লাভ এর জন্যই যুক্তি বিচার। সসত্যের জন্যেই আমাদের সৎকর্ম সম্পাদন করতে হবে, বাঁচতে হবে তথা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইমং পরত্তপ্পিসিতং শরীরং ধারেসি লোকস্ম হিতত্থমেব অজ্জেব এত্থ উপেতি তঞ্চে ইতো পরং কিং সুখমলিময্হং।" বোধিসত্ত্ব অবদান কল্পলতা,পৃঃ৩১।
ধর্ম ও ধর্মান্ধতা বিষয়টি সম্পর্কে পুনঃ আলোচনা করা অর্থহীন, কারণ ইতিপূর্বেই বিষয়টি সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
সর্বোপরি 'অমৃতের সন্ধানে' প্রথম প্রকাশ, ১৩৮৭ বাংলা এবং পগনঃ প্রকাশ, ১৩৯৯) এবং সত্য সংগ্রহ (মূল পালি ও বঙ্গানুবাদ, প্রথম প্রকাশ, ১৩৮৪ বাংলা এবং পুনঃ প্রকাশ ১৩৯৯)।
উপরিউক্ত গ্রন্থদ্বয়ে ব্যাখ্যাত হয়েছে চতুরার্যসত্য অর্থাৎ "সব্বসংগহো"। এক অর্থে অন্তিম গ্রন্থ দুটি মূল্যবান।
ভান্তে আনন্দ মিত্র মহাথের বিরচিত সর্বমোট গ্রন্থসংখ্যা হল ৯টি। এগুলিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাবে বিভক্ত করা অর্থহীন সুতরাং গ্রন্থগুলির রচনা সমূহের একটি সম্পূর্ণ সংকলন নির্মাণ দ্বারা বিষয়গুলি সুখপাঠ্য হবে বলেই মনে হয় এবং এক্ষেত্রে উৎসাহী পাঠককূলের অনুসন্ধিৎসা ও বৃদ্ধি পাবে।
আত্মজয়ী আনন্দমিত্র মহাথের সারা জীবন যে আদর্শ প্রচার করে গেছেন, তা থেকে একবিংশ শতাব্দীর বাঙালি বৌদ্ধ সমাজ নিঃসন্দেহে পথ চলার নির্দেশ পাবে। সংঘনায়ক আনন্দমিত্র আমাদের পথপ্রদর্শক। বৌদ্ধ জীবনদর্শের প্রতীক
সংঘনায়ক আনন্দমিত্রের মধ্যে আমরা খুঁজে পাই এমন একজন মানুষকে যাঁর সান্নিধ্যে এলে মনে হয় জীবন সার্থক।
বিশ্বনন্দিত সাহিত্যিক এইচ ডব্লু লংফেলো-র ‘কালজয়ী হয় যে মহামানব’ কবিতার কয়েকটি লাইন :
মহামানবের জীবন গাথা শেখায় মোদের অনুক্ষণ/
মোরাও পারি উঠতে হয়ে ভাস্বর ও চিরন্তন।
বিদায়বেলায় যায় সে ছেড়ে পৃথিবীর এই কোলাহল/
যায় সে রেখে বালুকাতটে পদাঙ্ক তাঁর অবিচল।
সম্পাদক আবুসো স্নেহভাজন বিপুলবংশ স্হবিরের প্রয়াস সার্থক হোক, সম্পাদিত গ্রন্থটি মুমক্ষুজনকে তাঁর বাণীতে ও নির্দেশিত পথে আলো দান করুক।
ভিক্ষু সুমনপাল
অতিথি প্রভাষক
পালি বিভাগ
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও
অতিথি প্রভাষক
বাংলা বিভাগ,
নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজ, কোন্নগর, হুগলি।
No comments:
Post a Comment